হাঙ্গেরির নিকোলেটটা ইনসেজের (Nikoletta Incze) গবেষণা
শিক্ষিত বাঙ্গালি মাত্রই (বিশেষতঃ বামপন্থী এবং মার্ক্সবাদী সম্প্রদায়) বিশ্ববিশ্রুত ‘হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়’ সম্পর্কে অত্যন্ত উচ্চ ধারণা পোষণ করেন।
যথার্থই হার্ভার্ড আধুনিক পৃথিবীর বহুবিধ সমস্যা সম্পর্কে গহন অনুসন্ধান ও গবেষণা করে চলেছে। পৃথিবীব্যাপী ইসলামিকরণ সম্পর্কিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে উঠে এসেছে, যা সারা বিশ্বেকে যথেষ্ট চিন্তায় ফেলেছে। …
গত ২০১৯ সনে ২২ জুন, ঐস্লামিক বিশেষজ্ঞ নিকোলেটটা ইনসেজ (Nikoletta Incze) হাঙ্গেরির জাতীয় টিভিতে এক ভাষণে যে তথ্য পেশ করেছেন, তা এখানে বঙ্গানুবাদের মাধ্যমে পাঠকের সামনে পরিবেশনের প্রয়াস করা হয়েছে।
ইনসেজ (Incze) বলছেন, বর্তমান সময়ের বহু ইসলামিক দেশ আদতে খ্রীষ্ট মতাবলম্বী দেশ ছিল কিছুদিন আগে পর্যন্ত। উদাহরণ স্বরূপ, টার্কি, ঈজিপ্ট, সিরিয়া, লেবানন ইত্যাদি দেশগুলি আদতে খ্রিস্টান দেশ হিসাবেই পৃথিবীতে পরিচিত ছিল।
পৃথিবীতে আরও অনেক দেশে ইসলাম ভিন্ন ধর্মের ওপর নিজ ধর্ম সংস্কৃতি কট্টরপন্থী আচার বিচার জোর করে চাপিয়ে দিয়েছে, আমূল পরিবর্তন করে আজ সেগুলিকে পূর্ণ রূপে ইসলামি দেশ করে তুলেছে, উদাহরণ স্বরূপ, পাকিস্তান আদতে ছিল হিন্দু ভূমি, আফগানিস্তান (গান্ধার) ছিল বৌদ্ধ মতাবলম্বী।
স্মরণ করুন, বামিয়ান বুদ্ধ মূর্তি যুগলের কথা, স্মরণ করুন মহাভারতের ধৃতরাষ্ট্র পত্নী গান্ধারীর কথা। আরেক দেশ ইরান যা আদতে ছিল ছিল জুরাষ্ট্রিয়ান, আজ পৃথিবী তাকে ইসলামী দেশ হিসাবেই চেনে।
ইনসেজ (Incze) এর মতানুসারে, কোন দেশের জনসংখ্যার বিন্যাসে যখন শতকরা ১৬% মুসলিম হয়ে যায়, তখন সেই দেশের ইসলামিকরণ রোধ করা প্রায় অসম্ভব। পরবর্তী ১০০ থেকে ১৫০ বছরে সেই দেশ সম্পূর্ণভাবে ইসলামিক হয়ে যেতে বাধ্য।
ডক্টর পিটার হ্যামন্ড-এর লেখা বই, “দাসত্ব, সন্ত্রাসবাদ এবং ইসলাম” (‘Slavery, Terrorism and Islam’)তে বলেছে,
“ইসলাম শুধুমাত্র একটি ধর্ম নয়, কোন উপাসনা পদ্ধতিও নয়, এর পূর্ণ বিকাশে, এটি একটি ১০০% রাজনৈতিক আগ্রাসনের জীবনশৈলী, a political encroaching system of life. ইসলামের নিজস্ব প্রতিষ্ঠিত পন্থ, আইনি, রাজনৈতিক, আর্থিক, সামাজিক এবং সামরিক অনুষঙ্গ রয়েছে।”
পৃথিবীর সমস্ত উদার, মুক্ত ও জনগণতান্ত্রিক সমাজ, ইসলামী আগ্রাসনের বিশেষ শিকার, বিশেষতঃ ভারতীয় উপমহাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ এবং মধ্যপ্রাচ্চের জিউইশরা।
ডক্টর হ্যামন্ড বলছেন, “যখন রাজনৈতিক রূপে আদর্শ, সহিষ্ণু, সাংস্কৃতিক ও বহুভাষিক বিবিধতায় সমৃদ্ধ সমাজ, প্রাথমিক ভাবে মুসলিমদের ধার্মিক অধিকারের স্বীকৃতি দেয়, ধীরে ধীরে অন্যান্য অনুষঙ্গ সেই সহিষ্ণু সমাজকে গ্রাস করতে শুরু করে।” বিগত ১৪০০ বছরের পৃথিবীর ইতিহাস তাই বলে।
এই আগ্রসনের একটা বিশেষ (পরিকল্পিত) ধরন আছে।
যতদিন মুসলিম জনসংখ্যা কোন দেশের মোট জনসংখ্যার ২% এর নিচে থাকে, ততদিন তারা মোটামুটি শান্তশিষ্ট সংখ্যালঘু সেজে দেশের অন্যান্য নাগরিকদের জন্য কোনরকম ‘আপদ/সঙ্কট’ সৃষ্টি না করে চুপচাপ বসবাস করে। যেমন ধরুন এখনকার:
আমেরিকায় — মুসলিম — ০.৬%
অস্ট্রেলিয়ায় — মুসলিম — ১.৫%
ক্যানাডায় — মুসলিম — ১.৯%
চীনে — মুসলিম — ১.৮%
ইটালিতে — মুসলিম — ১.৫%
নরওয়েতে — মুসলিম — ১.৮%
একবার মুসলিম জনসংখ্যা ২% থেকে ৫% পৌঁছন মাত্র তারা সে দেশের তুলনামূলক ভাবে সংখ্যালঘু (মূলনিবাসী) ভূমিপুত্র, অসন্তুষ্ট জনগোষ্ঠী আর সড়কছাপ মাওয়ালী, বা সমাজচুতি অপরাধীদের সঙ্গে নিয়ে ধর্মান্তরণের মাধ্যমে দলভারি করা শুরু করে। যেমন চলছে এখন::
ডেনমার্কে — মুসলিম — ২%
জার্মানিতে — মুসলিম — ৩.৭%
ইংল্যান্ডে — মুসলিম — ৩.৭%
স্পেনে — মুসলিম — ৪%
থাইল্যান্ডে — মুসলিম — ৪.৬%
ডক্টর হ্যামন্ড বলছেন, “একবার মোট জনসংখ্যার ৫% হয়ে উঠলেই তারা নানাভাবে রাজনৈতিক এবং সামাজিক প্রভাব আর চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করে, অন্যদের ওপর।”
যেমন, স্থানীয় বাজারে ইসলামী মতে গ্রাহ্য ‘হালাল’ মার্কা খাদ্যসামগ্রী রাখার জন্য প্রশাসনের কাছে চাপাচাপি শুরু করবে। বিপণন সংস্থায়, অফিসে, কারখানায়, ক্যান্টিনে, রেস্তোরায়, দোকানে ‘হালাল মার্কা (সার্টিফায়েড)’ খাবার-দাবার রাখতে চাপ সৃষ্টি করবে, প্রয়োজনে প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দেবে।
ঠিক এমনটাই ঘটছে এখন::
ফ্রান্সে — মুসলিম — ৮%
ফিলিপিন্সে — মুসলিম — ৫%
স্যুইডেনে — মুসলিম — ৫%
স্যুইৎজারল্যান্ডে — মুসলিম — ৪.৩%
নেদারল্যান্ডসে — মুসলিম — ৫.৫%
ত্রিনিদাদ টোবাগোতে — মুসলিম — ৫.৮%
এরপরই তারা সেই দেশের মধ্যেই প্রথমে নিজেদের সম্প্রদায়ের (মুসলিম অঞ্চলে) ওপর (ইসলামিক) শরিয়া আইন প্রচলিত করার জন্য সে দেশের সরকারের কাছে দাবি জানাতে শুরু করে।
জনসংখ্যার ১০% পৌঁছন মাত্রই তারা প্রাথমিক ভাবে নিজেদের ধর্মাবলম্বীদের নানান অসুবিধার কথা তুলে সেদেশের আইন শৃঙ্খলা ভাঙ্গা শুরু করে। আন্দোলন, মিছিল হরতাল শুরু করে।
ডক্টর হ্যামন্ড বলছেন, “ঠিক এই ঘটনাই ঘটছে বর্তমানে প্যারিসের রাস্তাঘাটে, আমরা ইতিমধ্যেই গাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনা দেখছি। যে কোন অমুসলিম কার্যকলাপই মুসলিমদের রোষের কারণ হয়ে দাঁড়ায়”….
(যেমন পশ্চিমবঙ্গেও ঠাকুর বিসর্জন, সরস্বতী পূজা, জন্মাষ্টমী পালন, শাঁখ বাজানো, দূর্গোৎসব, অমুসলিম, বিশেষতঃ হিন্দুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান (উৎসব নয়) ঘিরে নানা আছিলায় বাধাবিঘ্ন সৃষ্টি মানুষ প্রত্যক্ষ করছেন)…. এবং সেই রোষ থেকে হুঁশিয়ারি, তর্জন-গর্জন, হিংস্র প্রদর্শন, সামুদায়িক হিংসা ছড়িয়ে পড়ছে।
(ভারতেও CAA, NRC ঘিরে সদ্য প্রত্যক্ষদৃষ্ট ভয়ানক হামলা, অগ্নিসংযোজন ছড়িয়ে পড়ছে)…
…যেমন ঘটছে আমস্টারডামে, ফ্রান্সে। ধর্মীয় প্রফেটের ব্যঙ্গচিত্র, ধর্ম সম্পর্কিত সিনেমা” ইত্যাদি উপলক্ষ্যে নিত্যদিনের গন্ডগোল হচ্ছে।
যেমন ::
গায়ানাতে — মুসলিম — ১০%
ভারতে — মুসলিম — ১৮% (যদিও প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি বলেন অধিকাংশ মানুষ)
ইজরায়েলে — মুসলিম — ১৬%
কেনিয়াতে — মুসলিম — ১০%
রাশিয়াতে — মুসলিম — ১৫%
২০%-এ পৌঁছে হিংস্র আন্দোলনের ঘটনায় ক্রমাগত বৃদ্ধি ঘটে। ২০% ছাড়াতেই ভয়ংকর দাঙ্গা, জেহাদি কার্য্যকলাপ, বিক্ষিপ্ত খুন-জখম-গণধর্ষণ, ধর্মস্থলের পবিত্রতা নষ্ট করা, অগ্নিসংযোগ প্রাত্যহিক জীবনের ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন হয়ে ওঠে। ক্ষেত্র বিশেষে শুরু হয় তাহাররুষ গামাই।
উদাহরণ —
ইথিওপিয়াতে — মুসলিম — ৩২.৮%
জনসংখ্যার ৪০% এ গিয়ে দেশের মূলনিবাসী জনগণের অভিজ্ঞতা হবে, গণহত্যা, লাগাতার রক্তক্ষয়ী সন্ত্রাস, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সংঘাত, গোষ্ঠী কোন্দল নয়, সামুদায়িক যুদ্ধ, যেমন চলছে ::
বসনিয়াতে — মুসলিম — ৪০%
চ্যাডে — মুসলিম — ৫৩.১%
লেবাননে — মুসলিম — ৫৯.৭%
৬০% এ পৌঁছনোর পরবর্তী পদক্ষেপ হল অমুসলিম অবিশ্বাসী ‘কাফের’-দের একদম খতম অভিযান শুরু হবে, শুরু হয় ‘এথনিক ক্লিনজিং’, গণহারে খতম অভিযান, চূড়ান্ত উৎপীড়ন, জিজিয়া ট্যাক্স,অমুসলিম মহিলাদের শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ, জোর করে বিয়ে করে ধর্মান্তরণ করা::
যা এই দেশগুলোতে রোজ ঘটছে :
আলবানিয়াতে — মুসলিম — ৭০%
মালয়েশিয়াতে — মুসলিম — ৬০.৪%
কাতারে — মুসলিম — ৭৭.৫%
সূদানে — মুসলিম — ৭০%
যখন মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়াবে অমুসলিম জনগণের মুখোমুখি হতে হবে প্রাত্যহিক ধমকি, জেহাদ, রাষ্ট্র মদতে গণহত্যা, কারণ অবিশ্বাসী কাফেরদের উৎখাত করে গড়ে তুলতে হবে ১০০% মুসলিম জনসংখ্যাবহুল পূর্ণ ইসলামী রাষ্ট্র….যার বাস্তবায়ন দেখা গেছে :
ইজিপ্টে — মুসলিম — ৯০%
গাজা’তে — মুসলিম — ৯৮.৭%
ইন্দোনেশিয়াতে — মুসলিম — ৮৬.১%
ইরানে — মুসলিম — ৯৮%
ইরাকে — মুসলিম — ৯৭%
জর্ডনে — মুসলিম — ৯২%
মরোক্কোতে — মুসলিম — ৯৮.৭%
প্যালেস্টাইনে — মুসলিম — ৯৯%
সিরিয়াতে — মুসলিম — ৯০%
তাজিকিস্তানে — মুসলিম — ৯০%
টার্কিতে — মুসলিম — ৯৯.৮%
সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে — মুসলিম — ৯৬%
বাংলাদেশে — মুসলিম — ৮৩%
পাকিস্তানে — মুসলিম — ৯৭%
এবার ১০০% জনবসতি বহুল মুসলিম সমাজ তাদের মত করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে – যাকে ‘ইসলামী শান্তি’ বলে – ‘দার-আল-ইসলামের’ শান্তি, যেখানে শান্তি অর্থ হচ্ছে সকলেই যেহেতু মুসলিম, সেখানে তাই শান্তি প্রত্যাশিত, যেখানে স্কুল মানেই মাদ্রাসা, একমাত্র ধর্মীয় শব্দ হল ‘কোরআন’।
যা আজ এই দেশগুলোতে বাস্তব ::
আফগানিস্তানে — ১০০%
সৌদি আরবে — ১০০%
সোমালিয়াতে — ১০০%
ইয়েমেনে — ১০০%
ডক্টর হ্যামন্ডের সুদীর্ঘ গবেষণা অনুযায়ী “এই চরম শান্তি প্রতিষ্ঠার ইসলামিক ধারণা (সম্ভবতঃ) কখনই বাস্তবায়িত হয় না, কারণ দুর্ভাগ্যবশত ১০০% জনসংখ্যায় পৌঁছে কট্টরপন্থী জেহাদী গোষ্ঠীরা নানাবিধ কারণে তাদের রক্ত পিপাসা মেটাতে তুলনায় কম কট্টর মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংহার শুরু করে”….
“একটা বিষয় পরিষ্কার করে বোঝার আছে, যেসব দেশে মুসলিম জনসংখ্যা ১০০% এর অনেক কম, যেমন ফ্রান্স, সেখানেও অদ্ভুত ভাবে সংখ্যালঘু মুসলিমরা আশেপাশের প্রতিবেশীদের সঙ্গে মিলে মিশে বসবাস না করে, সেই সুদূর মধ্যপ্রাচ্যের আরবি কায়দায় নিজেদের আলাদা ঘেটো বানিয়ে ঘেরা অপরিচ্ছন্ন ঘুপচি অঞ্চলে একত্রে বসবাস করে, যে অঞ্চলে কিন্তু শুধু মুসলিমরাই ১০০%, আর কাউকে শান্তিতে টিকতে দেয় না, উদাহরণ বার্মিংহাম,… আর তাদের সেই ঘেরাটোপের মধ্যে তারা সকলে শরিয়ত আইন অনুযায়ী জীবন যাপন করে, না হলে সরকারকে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে, … দেশের সংসদীয় গণতান্ত্রিক বা সাংবিধানিক আইন মানতে চায় না এবং তারা চায় না যে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর সেখানে আদৌ প্রবেশও করে।”হ্যামন্ড জনসংখ্যার বিন্যাস নিয়েও চিন্তিত।তাঁর কথায়, “বর্তমানে ১.৫ বিলিয়ন মুসলিম সমুদায় পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ২২% হয়ে দাঁড়িয়েছে”…. তিনি আরও বলছেন,… “কিন্তু তাদের জন্মহার হিন্দু, বৌদ্ধ, ইহুদি, খ্রিস্টান বা প্রাচীন স্বদেশজাত অন্যান্য সমস্ত সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু, যে কোন ধর্মাবলম্বী মানুষের চেয়ে ঢের বেশি।তাদের জনসংখ্যা এতো বেশি যে এই শতাব্দীর শেষে গিয়ে, পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ৫০% পেরিয়ে যাবে।”