বুধবার নয়া দিল্লি ও ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীরা। দুটি রেল ও একটি বিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মোদী বলেন, গত ৯ বছরে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের যে অগ্রগতি হয়েছে বিগত দশকে তা হয়নি। অন্যদিকে শেখ হাসিনা বলেছেন, দু’দেশের সম্পর্ক এখন অনন্য উচ্চতায় বিরাজ করছে।
ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য ত্রিপুরার আগরতলার সঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তের আখাউড়া পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রেলপথ পুনরায় চালু হওয়াকে ঐতিহাসিক এবং দুই দেশের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করেছেন দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী। ৭০ বছর আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই রেলপথটি পুনরায় চালু করতে বাংলাদেশ সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিল ভারত।
ভারত সরকারের অর্থ ও প্রযুক্তি সহায়তায় সেটি নতুন করে চালু হয় বুধবার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এর জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই প্রথম ভারতের উত্তর-পূর্বের সঙ্গে বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হলো। দেশ ভাগের পর বছর কয়েক ওই রেলপথ তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে চালু ছিল। তারপর বন্ধ হয়ে গেলে বাংলাদেশ গঠনের পর ৫২ বছর কেটে গেলেও সেটি আর নতুন করে চালু হয়নি।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল ত্রিপুরা- বাংলাদেশের সঙ্গে চালু রেলপথের সুবাদে কলকাতা- আগরতলার যোগাযোগ আরো সহজ হয়ে গেল। কলকাতা থেকে ট্রেনে আগরতলা যেতে নিউ জলপাইগুড়ি এবং গুয়াহাটি সহ অসমের বিস্তীর্ণ এলাকা পেরতে হয়। তার জন্য সময় লাগে ৩৮ ঘণ্টা। বুধবার মোদী হাসিনার হাত ধরে চালু হওয়া আগরতলা- আখাউড়া রেলপথ কলকাতা ত্রিপুরার যোগাযোগ অনেক সহজ করে দেবে। কলকাতা থেকে ঢাকা ট্রেন সার্ভিস অনেক আগেই চালু হয়েছে। কলকাতা থেকে ঢাকা হয়ে আগরতলা মাত্র ১২ ঘন্টায় পৌঁছে যাওয়া যাবে বলে দাবি করা হচ্ছে।
কলকাতা সহ ভারতের বাকি অংশ থেকে পণ্যবাহী ট্রেন দ্রুত এই রেলপথ ধরে উত্তর পূর্বে রাজ্যগুলিতে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। বাণিজ্য দু’দেশেই শ্রীবৃদ্ধি পাবে। এই বিপুল সুযোগ থমকে ছিল আখাউড়া- আগরতলার মধ্যে বন্ধ হয়ে থাকা ১২ কিলোমিটার সীমান্ত রেলের জন্য।
দুই প্রধানমন্ত্রী বুধবার দ্বিতীয় যে রেলপথটি উদ্বোধন করেন সেটিও ভারত- বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধিতে নতুন মাত্রা দেবে। হাসিনা ও মোদী বুধবার যশোর ও মংলা বন্দর পর্যন্ত রেলের সূচনা করেন। এই রেল পথ চালুর ফলে কলকাতা বন্দর থেকে মংলা হয়ে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় পণ্য পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। বাংলাদেশেও এর ফলে কলকাতা বন্দর ব্যবহারের সুযোগ পাবে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, তার সময় বাংলাদেশের সঙ্গে তিনটি রেলপথ পুনরায় চালু হলো, যা ভারত ও বাংলাদেশের বাণিজ্যিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।