অসমের বৃহত্তম ঘর ওয়াপ্সিতে ২৪ টি খ্রিস্টান পরিবার হিন্দু ধর্মে ফেরত আসল

অসমের বৃহত্তম ঘর ওয়াপ্সিতে ২৪ টি খ্রিস্টান পরিবার হিন্দু ধর্মে ফেরত আসল

কয়েক সপ্তাহ আগেই আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আসামের মরিগাঁও জেলার তিওয়া জনতাতিকে অনুরোধ করেছিলেন তাদের সংস্কৃতি এবং পরিচয় থেকে দূরে সরে না যেতে এবং ধর্মান্তকরণ এর প্রবণতা থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকার জন্য।

আর তার কিছুদিনের মধ্যেই সম্প্রদায়টির ২৪ টিরও বেশি পরিবার তাদের শিকড়ে ফিরে আসল। সোমবার আসামের নেলি থেকে কার্বি অ্যাংলং যাওয়ার পথে মর্টান গ্রামে গোভা (তিওয়া) রাজার দরবারে পালিত একটি ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানে এই ঘর ওয়াপ্সি ঘটে।

এছাড়াও সাংস্কৃতিক পরিষদের নেতৃত্বে আয়োজিত তিয়াদের আরেকটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে, ১১টি পরিবারের ৪৩ জন সদস্য আবার হিন্দুধর্মে ফিরে আসে। সেখানকার রাজা দীপ সিং দেওরোজার দরবারে আনুষ্ঠানিকভাবে হিন্দু ধর্মে ফিরে আসে।

গোভা দেওরাজা পরিষদ অর্গানাইজেশনের একজন সদস্য বলেন, ‘তিওয়া ভাষা সংস্কৃতি ও উদ্ধার পর্ব’ একটি পুনরুত্থান মিশনে কাজ করছে। এই সংগঠনটি আগেও এই ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। কামরুপ এবং কার্বি আংলং-এর দুটি গ্রামকে তারা শিকড়ে ফিরিয়ে এনেছে।

বোর্দোলোই বলেন যে পরিবারগুলো আর কখনো খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তারা তিওয়া দেবীর পূজা করার এবং তিওয়ার বিশ্বাস ও রীতিনীতি মেনে চলার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে‚ ২০১১ সালের আদমশুমারির তথ্য অনুসারে, খ্রিস্টানরা অসমে বর্তমান তফসিলি উপজাতি জনসংখ্যার ১২.৮ শতাংশ, যা ২০০১ সালে ৮.৮ শতাংশ ছিল এবং ১৯৯১ সালে ৭.৬ শতাংশ। অর্থাৎ সেখানে ধর্মান্তকরণ এর হার বিপজ্জনকভাবে বাড়ছে।

কুকি (মিজো), জৈন্তিয়া, গারো, হামার, লুসাই (মিজো) এবং নাগা উপজাতি প্রধানত খ্রিস্টান সহ ছোট পাহাড়ি উপজাতিদের মধ্যে খ্রিস্টানদের অংশ অনেক বেশি।

এছাড়াও উত্তর-পূর্ব সমভূমিতে ৩২ লক্ষ ST-এর মধ্যে, ১৩.৬ লক্ষ বোরো আছে যাদের ১০% খ্রিস্টান।

প্রতিটি জাতি উপজাতিই এইভাবে ধর্মান্তকরণ এর শিকার হয়েছে।

এই ঘর ওয়াপ্সির পরে একজন শিকড়ে ফিরে আসা যুবক বলেন‚ “আমরা এখন আমাদের নিজস্ব সম্প্রদায়ে ফিরে এসেছি। আমাদের পূর্বপুরুষ এবং পিতামহ খ্রিস্টান ছিলেন। আজ আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমাদের নিজস্ব সম্প্রদায়ে ফিরে যাবো। আমরা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে চাই যে কেউ আমাদের এই পুনরুত্থানে বাধ্য করেনি, আমরা স্বেচ্ছায় তিওয়া সম্প্রদায়ে ধর্মান্তরিত হয়েছি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.