গত ২৬ মার্চ পাকিস্তানের বালাকোটে গিয়ে জইশ ই মহম্মদের ঘাঁটিতে বোমা ফেলে এসেছে ভারতের বায়ুসেনা। তাতে ঠিক কতজন জঙ্গি হতাহত হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। শুক্রবার সেই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বললেন, ইসলামাবাদ থেকেই প্রথমে টুইট করে বিমান হানার কথা বলা হয়েছিল। পাকিস্তান কি এতই বোকা যে অকারণে টুইট করবে? বিরোধীরা প্রমাণ চাইছেন। ১৩০ কোটি ভারতবাসীই আমার প্রমাণ।
এদিন দিল্লির কাছে গাজিয়াবাদে এক জনসভায় মোদী বলেন, যাঁরা বিমান হানার প্রমাণ চাইছেন, তাঁদের উদ্দেশ্য, পাকিস্তানকে তোয়াজ করা। তাঁর কথায়, পাকিস্তান তো নিজেই বিমান হানার কথা স্বীকার করেছে। আমার সরকার এজন্য কৃতিত্ব দাবি করছে না। যাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, তাঁদের আমি বলব, পাকিস্তানকে তোয়াজ করবেন না।
বালাকোটে বিমান হানা নিয়ে কেবল বিরোধীরাই যে প্রশ্ন তুলছেন তা নয়। পুলওয়ামায় নিহত জওয়ানদের আত্মীয়রাও কেউ কেউ জঙ্গিদের মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। উত্তরপ্রদেশের এক নিহত সৈনিক রাম ভকিলের বোন রাম রক্ষা বলেন, পুলওয়ামায় আমরা দেখেছি, বিস্ফোরণের পরে চারদিকে অনেকের দেহাংশ ছড়িয়ে পড়ে আছে। সীমান্তের অপর দিকেও তো তেমন কিছু দেখতে পাওয়া উচিত ছিল। আমি নিশ্চিত যে বায়ুসেনা হানা দিয়েছিল। কিন্তু কোথায় তারা হানা দিল? বিমান হানার নির্দিষ্ট প্রমাণ থাকা উচিত ছিল। প্রমাণ ছাড়া আমি কীভাবে বিশ্বাস করব? পাকিস্তান বলছে, তাদের কোনও ক্ষতি হয়নি।
উত্তরপ্রদেশেরই আর এক শহিদ সৈনিক প্রদীপ কুমারের মা সুলতা বলেন, আমরা তো সীমান্তের ওপারে কাউকে মরতে দেখিনি। নির্দিষ্ট করে কিছু জানাও যাচ্ছে না।
কোনও বিরোধী দল অবশ্য সরাসরি বলেনি যে, বিমান হানায় জঙ্গিমৃত্যুর খবর মিথ্যা। কিন্তু বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বিরোধীরা তো বটেই, এমনকী বিজেপির শরিকরাও কেউ কেউ বলেছে, সরকার প্রমাণ করুক, বালাকোটে অনেক জঙ্গি হতাহত হয়েছে।
মোদী কিন্তু প্রমাণ দেওয়ার দাবি এড়িয়ে গিয়ে বলেছেন, সন্ত্রাসবাদীরা যখন ৪০ জনের বেশি জওয়ানকে হত্যা করল, তখন কি আমার চুপ করে থাকা উচিত ছিল? আমিও যদি আগের সরকারের মতোই আচরণ করি, তাহলে মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পাঠিয়েছে কেন?
বিজেপির বক্তব্য, ২০০৮ সালে মুম্বইয়ে জঙ্গি হানার পরে তৎকালীন ইউপিএ সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি।