কিছু একটা ঘটতে চলেছে। কিন্তু কি ঘটতে চলেছে তা এখনও পরিস্কার নয়। গোটা কাশ্মীর উপত্যকা জুড়ে শুধুই আতঙ্ক আর স্তব্ধতা। মাঝে মধ্যেই বেজে উঠছে সাইরেন আর ভারী বুটের শব্দে কেঁপে উঠছে উপত্যকা। গত কয়েকদিন আগে অমরনাথ যাত্রা বন্ধ করে দিয়ে হঠাৎই কাশ্মীরে বাড়ানো হয়েছিল আধাসেনার বহর। সম্ভাব্য জঙ্গি হানার খবর পেয়েই কি এই ব্যবস্থা, নাকি অন্য কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে সরকারের তা নিয়ে ইতিমধ্যে জল্পনা তৈরি হয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাশ্মীর থেকে ফেরানো হচ্ছে পর্যটকদের। এই অবস্থায় আতঙ্ক আরও বাড়ছে।
এক নজরে গত ২৪ ঘন্টায় কি হল-
কাশ্মীরের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের মুখোমুখি হন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুধু অজিত দোভালই নয়, সেই বৈঠকে ছিলেন আইবি প্রধান অরবিন্দ কুমার, র’-এর অফিসার সামন্ত গোয়েল. স্বরাষ্ট্র সচিব রাজীব গৌবা ও অন্যান্যা আধিকারিকরা। রবিবার সারা দিন ধরে দফায় দফায় এই বৈঠক চলে।
এরই মধ্যে রবিবার মধ্যরাতে হঠাত করেই গৃহবন্দি করা হল দুবারের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি এবং ওমর আবদুল্লাকে। শুধু তাই নয়, গৃহবন্দি হলেন প্রাক্তন বিধায়ক সাজ্জাদ লোনও। গ্রেফতার সিপিএম নেতা ইউসুফ তারিগামি এবং কংগ্রেস নেতা উসমান মজিদ। হঠাত করে কেন এমন সিদ্ধান্ত সরকারের তা নিয়ে আরও জল্পনা-আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে কিছু জানানো হয়নি।
এরপরেই উপত্যকা জুড়ে জারি করা হল ১৪৪ ধারা। অনির্দিষ্ট কালের জন্য জারি করা হয়েছে কার্ফু। আগামী নির্দেশ দেওয়া না পর্যন্ত কার্ফু জারি থাকবে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। কোনও জায়গায় জমায়েত দেখলেই প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ।
স্কুল-কলেজ বন্ধ করা হল অনির্দিষ্টকালের জন্যে। বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে পড়াশুনা করা পড়ুয়াদের নিরাপদ জায়গায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে গোটা রাজ্যের ইন্টারনেট পরিষেবা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কেবল পরিষেবাও। ফিরিয়ে আনা হয়েছে যুব ক্রিকেটারদেরও।
সূত্রের খবর, শোপিয়ানের মতো স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে থানা পাহারা দিচ্ছে বিএসএফ। শ্রীনগর-কাশ্মীর জুড়ে রবিবার রাতে বিশাল হাই-অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে সেনা-সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে। বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। বিভিন্ন জায়গায় পিকেটিং করা হয়েছে। চলছে সেনার টহলদারি।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তেও সেনাবাহিনীকে চূড়ান্ত সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে আজ সোমবার জরুরি বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একাংশের মতে, কাশ্মীর নিয়ে বড় কোনও সিদ্ধান্ত নিতেই এই বৈঠক হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এনএসএ অজিত দোভাল সহ দেশের গোয়েন্দা আধিকারিকদের সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বৈঠক করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।