ভূপেন্দ্রকিশোর রক্ষিত রায় (১৯ মার্চ,১৯০২ – ২৪ এপ্রিল,১৯৭২) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী। তিনি ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ ও লেখক। তিনি ফরোয়ার্ড ব্লকপন্থী রাজনৈতিক নেতা এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভার সদস্য ছিলেন।
তিনি ১৯০২ সালের ১৯ মার্চ অবিভক্ত বাংলার ময়মনসিং শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ছিল যোগেন্দ্রকিশোর রক্ষিত রায়। ঢাকায় হেমচন্দ্র ঘোষের নেতৃত্বে বিপ্লবীজীবন শুরু করেন। তিনি অল্প বয়সেই বিপ্লবী ‘বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স’ দলের সভ্য হন এবং সেই দলের বিশিষ্ট ব্যক্তি হয়ে উঠেন। ১৯৩০ সনের গ্রীষ্মকালে বিপ্লবী বিনয়কৃষ্ণ বসু তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তিনি বিনয় বসুকে ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র রাজনীতিতে দীক্ষা দেন। ১৯৩০ -৩৮ খ্রিস্টাব্দে স্টেট প্রিজনাররূপে বিভিন্ন জেলে বন্দিজীবন কাটান। গান্ধীজির সঙ্গে কথা বলার জন্য ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে কলকাতা প্রেসিডেন্সি জেলে আনা হয়। তার কিছুকাল পর তিনি মুক্তি পান। তিনি দণ্ডকারণ্যে উদ্বাস্তু পুনর্বাসনে সহযোগিতা করেন। কলকাতার মহাজাতি সদনের ট্রাস্টি ও বিপ্লবী নিকেতনের সহসভাপতি ছিলেন। উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার সপ্তগ্রাম সর্বেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয় ও বাদু পল্লী নিকেতন সংস্থার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল।
১৯২৮-৩২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর পরিচালিত “বেণু” পত্রিকা যুবমহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল। তিনি ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে বিপ্লবী উজ্জ্বলা মজুমদারকে বিবাহ করেন। তিনি ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও রাজনৈতিক ধারার বিবর্তনের উপর কতিপয় মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেন। তার রচিত ভারতের সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত গ্রন্থ হচ্ছে – যে পতাকা মাটিতে নামেনি, ভারতীয় রাজনীতির রূপরেখা, চলার পথে, নারী, সবার অলক্ষ্যে (২ খণ্ড), ভারতের সশস্ত্র বিপ্লব।
বিপ্লবী ভূপেন্দ্রকিশোর রক্ষিত রায় ১৯৭২ সালের ২৪ এপ্রিল পরলোকগমন করেন।