জীবন সকলকে সমান সুযোগ দেয় না। কোভিডের ক্ষেত্রেও বিষয়টি তার ব্যতিক্রম নয়। তেমনই বোঝা যাচ্ছে হালের পরিস্থিতি দেখে।
এখন কোভিডের টিকাকরণের হার ভালোই। অনেকেই নিয়ম মেনে টিকা নিচ্ছেন। টিকার দু’টি ডোজই অনেকের নেওয়া হয়ে গিয়েছে। তার পরে হঠাৎ উদয় হল এই ওমিক্রন। যাঁদের টিকার দু’টি ডোজ নেওয়া হয়ে গিয়েছে, তাঁরা অনকেই ভেবেছিলেন, এর পরে আর করোনা সংক্রমণ হবে না। কিন্তু জীবনের মতো করোনাও সবাইকে সমান সুযোগ দেয় না। টিকার দু’টি ডোজ নোওয়ার পরেও কারও কারও ওমিক্রন সংক্রমণ হল। কারও হল না। এর কারণ কী?ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
সম্প্রতি Harvard বিশ্ববিদ্যালয় এবং MIT-র গবেষকরা যুগ্মভাবে এর কারণ খোঁজার চেষ্টা করেছেন। সেখানে উঠে এসেছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। দেখে নেওয়া যাক, সেগুলি কী কী:
- টিকার দু’টি ডোজ নেওয়ার পরেও প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো পর্যাপ্ত পরিমাণে রোগ প্রতিরোধ শক্তি পান না।
- যাঁরা টিকার কোনও ডোজই নেননি, তাঁদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। তাঁদের চেয়ে আগের তালিকায় থাকা ২০ শতাংশ মানুষের রোগ প্রতিরোধ শক্তিও বেশি।
- কার ওমিক্রন সংক্রমণ হবে, তার পুরোটাই নির্ভর করছে, ওই ব্যক্তির শরীরের টি-সেলের উপর। কারও শরীরের বিশেষ ধরনের টি-সেল ওমিক্রনকে আটকাতে পারে। কারও ক্ষেত্রে ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিনকে আটকাতে পারে না। ফলে কারও ওমিক্রন হয়, কারও হয় না।
- কার শরীরের টি-সেল ওমিক্রনকে ঠেকাতে পারবে, তার পুরোটাই পূর্বনির্ধারিত। অর্থাৎ সেটি নির্ভর করছে ওই ব্যক্তির জিনের উপর। কারও কারও জিনের গড়নের মধ্যেই ওই টি-সেলের সূত্র লুকিয়ে আছে, যা ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিনকে ভেঙে দিতে পারে।
- টিকার মাধ্য়মে যে টি-সেল তৈরি হচ্ছে, তা অনেকে ক্ষেত্রেই ওমিক্রনকে ঠেকাতে পারছে না। তাই ইতিমধ্যেই ওমিক্রন বা করোনার পরের রপগুলির সঙ্গে লড়াই করার জন্য নতুন টিকা বা বুস্টারের কথা ভাবা হচ্ছে।
এখান থেকে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি টিকা নিয়ে লাভ নেই? ওমিক্রন হওয়ার থাকলে, তা কি আটকানো যাবে না? পুরোটাই যদি জিনের উপর নির্ভর করে, তাহলে টিকা কী করছে?
এই প্রশ্নেরও উত্তর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, টিকা না নিলে করোনার যে কোনও সংক্রমণই মারাত্মক আকার নিতে পারে। তাকে ঠেকাতে টিকা ভালোই কাজ করেছে। ওমিক্রনে যে অনেকেরই বড় সমস্যা হয়নি, তার কারণও আগে থেকে টিকার দু’টি ডোজ নিয়ে থাকা।