করোনা-শূন্য নীতি (জিরো কোভিড টলারেন্স) মেনেও লাভ হয়নি। লকডাউন তুলে নেওয়ার পর থেকেই ফের করোনার বিস্ফোরণ হয়েছে চিনে (China Covid)। দেশে করোনা সংক্রমণ শূন্য না হওয়া ইস্তক কড়াকড়ি বজায় থাকবে, তেমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছিল সরকার। কিন্তু তা সত্ত্বেও সংক্রমণ এখন ঊর্ধ্বমুখী।
সাম্প্রতিক কালে গোটা বিশ্বে কোভিড সংক্রমণ অনেকটা কমে গিয়েছে। যদিও এ সময়ই সংক্রমণ বেড়েছে চিনে। আর এতটাই বেড়েছে যে ফের তা অতিমহামারী পর্যায়ে চলে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চিনেরই ভাইরাস বিশেষজ্ঞদের মত, আগামী কিছুদিনের মধ্যেই কোভিডের নতুন ওয়েভ আছড়ে পড়বে চিনে। পরপর তিনটি ওয়েভ সাঙ্ঘাতিক তাণ্ডব করবে। অন্তত ৬০ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত হতে (China Covid) পারেন। আগামী তিন মাসের মধ্যে সংক্রমণ ভয়ঙ্কর পর্যায়ে পৌঁছবে বলেও ভবিষ্যতবাণী করেছেন চিনের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এমনও আশঙ্কা করা হচ্ছে, করোনার দাপটে চিনে কম করেও ২০ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
সম্প্রতি শাসক দল কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, এ বারে কড়াকড়ি কমানো হবে দেশে। এত দিন জিরো-কোভিড পলিসি থেকে এতটুকু সরেনি বেজিং। নিয়ম ভাঙলে শাস্তিও বরাদ্দ ছিল মানুষের কপালে। কিছু দিন আগে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ বারে কিছুটা লঘু করা হবে করোনা-নীতি। কিন্তু যে হারে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে, তাতে বেজিং-সহ ঘন জনবসতিসম্পন্ন শহরগুলো ফের ‘তালাবন্ধ’ হওয়ার মুখে। দোকান-বাজারও হয়তো বন্ধ করা হবে। অফিসগুলোর কাজকর্ম স্বাভাবিক হয়েছিল সম্প্রতি। এ বার হয়তো বাড়ি থেকে কাজ করার বিষয়ে ফের জোর দেওয়া হবে। বেজিংয়ে শপিং মল, পার্কগুলি ফের বন্ধ করা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে বলা হচ্ছে, যতটা সম্ভব বাড়িতে থাকতে।
পশ্চিমী এক গবেষণা সংস্থার দাবি, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে চিন থেকে করোনা ফের দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে পারে গোটা বিশ্বে। গবেষণা সংস্থার দাবি, গোটা বিশ্বে প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। আবারও সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি ফিরে আসতে পারে। যদিও এই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে শি জিনপিং সরকার।
মাসে এর বিরুদ্ধে দেশজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। ফলে বাধ্য হয়ে সেই অবস্থান থেকে সরে আসতে হয়। ধীরে ধীরে শিথিল করা হয় কোভিডের বিধি-নিষেধ। এর পরই হু হু করে বাড়তে শুরু করে সংক্রমণ ও মৃত্যু। মৃতের সংখ্যা বাড়তেই ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে কড়া নির্দেশ দেয় বেজিং। কোভিডে মৃত্যু হলেও ডেথ সার্টিফিকেটে তা নিউমোনিয়া লেখা হচ্ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। আগের মতো নিয়ম মেনে সংক্রমিতের মৃত্যুর পর মৃতদেহ পরিবারের হাতেও দেওয়া হচ্ছে না, চুপিচুপি তা পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে খবর। কোভিডের বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর থেকেই শহরের শ্মশানগুলিতে দেখা গেছে ভিড়। সকাল থেকে রাত অবধি চলছে দেহ সত্কারের কাজ। অনেকেরই দাবি, হাজার হাজার দেহ পোড়ানো হচ্ছে শ্মশানগুলিতে।