ব্রিটেন থেকে আমেরিকা— কোভিডের ডেল্টা রূপ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের ১০০-রও বেশি দেশে। কোভিডের এই রূপ নিয়ে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-ও। যদিও এপ্রিল-মে মাসে ভারতে কোভিডের এই রূপ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল বলে জানিয়েছে আইসিএমআর। দেশে দ্বিতীয় ঢেউ বড় আকার ধারণ করার পিছনেও এই রূপকেই দায়ী করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকও। কোভিডের এই ডেল্টা রূপই আগামী দিনে রাজ্যের চিন্তা বাড়াতে পারে বলে আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন কল্যাণীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্স-এর অধ্যাপক এবং ন্যাশনাল সায়েন্স চেয়ার বিজ্ঞানী পার্থ মজুমদার।
দেশে কোভিডের রূপ বদল এবং নতুন প্রজাতির উপর গবেষণা চলছে। প্রতি রাজ্য থেকে কোভিডের নমুনা নিয়ে চলছে জিন সিকোয়েন্সিং। রাজ্যের কল্যাণীতে অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্স-এ চলছে জিনের উপর নজরদারির কাজ। বর্তমানে কল্যাণীর এই গবেষণাগারে কোভিডের যত নমুনার জিন সিকোয়েন্সিং করা হয়েছে, তার ৯০ শতাংশই ডেল্টা রূপ বলে জানান পার্থ। ডেল্টা, কোভিডের আগের আলফা রূপের থেকে প্রায় ৪০-৬০ শতাংশ বেশি সংক্রামক।
কোভিডের তৃতীয় ঢেউ অবশ্যম্ভাবী। অগস্টে এই ঢেউ আছড়ে পরার পূর্বাভাস আইসিএমআর-এর বিজ্ঞানীদের। ২০২০ সালে কোভিডের প্রথম পর্যায়ে আলফা এবং ২০২১ সালে কোভিডের ডেল্টা রূপ ঢেউ তুলেছে। তা হলে তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য কি কোভিডের নতুন রূপ দায়ী হবে? পার্থ বললেন, ‘‘কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য নতুন রূপের দরকার নেই। ডেল্টা রূপই তৃতীয় ঢেউ আনতে পারে। বিভিন্ন রাজ্যে চলা কড়াকড়ি এবং বেশি মানুষ মাস্ক পরে থাকার জন্য কোভিড কমেছে। ডেল্টার শক্তি এখনও কমে যায় নি। কড়াকড়ি শিথিল হলেই আবার সংক্রমণ ছড়াতে পারে ডেল্টাই।’’
কোভিডের আর এক রূপ ডেল্টা প্লাসে দেশের ১১টি রাজ্যে ৫৫ থেকে ৬০ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তবে ডেল্টা প্লাস, ডেল্টার থেকে বেশি সংক্রমক হলে আরও বেশি রাজ্যে এর হদিশ মিলত বলে মনে করেন পার্থ।
ডেল্টা রূপ নিয়ে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। কোভিডের এই রূপের চারিত্রিক বদলের উপর নজরদারির পাশাপাশি ডেল্টা নিজেকে বদলে আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে কি না, তা দেখা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত একাধিক বার ডেল্টা তার বদল ঘটিয়েছে, কল্যাণীতে গবেষণায় তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলে জানান পার্থ। কিন্তু সেই রূপ যে আগের থেকেও ভয়াবহ, তা বলতে নারাজ তিনি।