সচেতনভাবে পোলিও টিকাকরণের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর হয়েছিলেন তিনি। এবার নিজের অজান্তেই হয়ে গেলেন করোনা সচেতনতার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর। বলিউড শাহেনশা করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর সাধারণের মধ্যে বেড়ে ওঠা সচেতনতা তেমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনের হাজারও চোখরাঙানি যা করতে পারেনি। একটা টুইটেই তা করে দিয়েছেন অমিতাভ বচ্চন (Amitabh Bachchan)।
শেষ ১৩ দিনে ১৩৩০ মুম্বইবাসীকে মাস্ক না পরার জন্য জরিমানা করেছিল বৃহন্মুম্বই পুরনিগম (BMC)। কলকাতাতেও প্রতিদিন গড়ে ১৫০ মাস্কহীন পথচারীকে জরিমানা করা হচ্ছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৮ ধারা অনুসারে এখন মাস্ক ছাড়া বাড়ি থেকে বেরনো আইনত দণ্ডণীয়। তথ্য বলছে, অমিতাভ বচ্চন করোনা পজিটিভ হওয়ার পর সে সংখ্যা অদ্ভুতভাবে কমছে। রবিবার থেকে সিংহভাগ লোকই রাস্তায় মাস্ক পরে বেরচ্ছেন। কারণ?
ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রির ডিরেক্টর ডা. প্রদীপ সাহা বলছেন, এটা সম্পূর্ণ মনস্তাত্বিক। অমিতাভ বচ্চন তুমুল জনপ্রিয় একজন অভিনেতা। তাঁকে নিয়ে মানুষের মনে একটা সাইকোলজিক্যাল ফিকশেসন আছে। এটা কিছুটা সেলিব্রিটি ‘ওয়ারশিপ সিন্ড্রোমে’র মতো। সেখান থেকেই আসছে দ্বন্দ্ব। অমিতাভ বচ্চনের বাড়ি-গাড়ি-ভাললাগার খাবার, সমস্ত মুখস্থ কোটি কোটি ভক্তর। এবার যখন পাড়ার লোকের মৃত্যু হচ্ছে, তখন অতটা ভয় লাগছে না। দেখা যাচ্ছে, পাশের বাড়ির লোক আক্রান্ত হওয়ার পরেও একজন থুতনিতে মাস্ক ঝুলিয়ে ঘুরছেন। সেই ব্যক্তিই অমিতাভ বচ্চন আক্রান্ত হওয়ার পর অনেক বেশি নিয়ম মানছেন।
ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিশিষ্ট মনোবিদ ডা. সাহা জানিয়েছেন, মনে রাখতে হবে অমিতাভ বচ্চন শুধু এ দেশের সেলিব্রিটি নন। সারা পৃথিবীতে তিনি সমাদৃত। এত সচ্ছল, এমন বিশাল বাংলোতে থাকেন, যাঁর এত প্রতিপত্তি। সাধারণ মানুষের অবচেতনে এটা কাজ করছে যে, বিগ বি’র তো সব আছে। এত অভিজাত একজন মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে বাজার করেন না। দোকানে গিয়ে আড্ডা মারেন না। ওঁর মতো সেলিব্রিটির বাড়িও সবসময় সাফসুতরো হচ্ছে। তাও তিনি যখন এই ভাইরাসে আক্রান্ত, তার মানে আমাদেরও হতেই পারে। এই ভয় থেকেই সাধারণ মানুষ এখন মাস্ক পরছে।
এদিকে এমন ঘটনায় খুশি অমিতাভ ভক্তরা। শহরের অমিতাভ বচ্চন ফ্যান ক্লাবের সম্পাদক সঞ্জয় পাতোদিয়ার কথায়, বিগ বি সিনেমায় সবসময় লড়াকু চরিত্রে অভিনয় করেছেন। অনেকেই তা দেখে রোজকার জীবন সংগ্রামে রশদ পেয়েছেন। আজ যদি ওঁর জন্য মাস্ক পরার সচেতনতা বৃদ্ধি পায়, সেটা নিঃসন্দেহে আনন্দের।