মেডিক্যাল থেকে জীবনদায়ী ইঞ্জেকশন সরানো হয়েছিল ‘নিয়ম বহির্ভূতভাবে’, রিপোর্ট ২ তদন্ত কমিটির

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ (Calcutta Medical College & Hospital) থেকে করোনা চিকিৎসার জীবনদায়ী টসিলিজুম্যাব ইঞ্জেকশন(Tocilizumab injection) উধাওয়ের ঘটনায় জোড়া তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা পড়ল স্বাস্থ্যদপ্তরে। রিপোর্টে স্পষ্ট উল্লেখ, নিয়ম বহির্ভূতভাবেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের স্টোর থেকে জীবনদায়ী এই ওষুধ তুলে নেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ এক মহিলা মেডিক্যাল অফিসারের বিরুদ্ধে। এখন এই রিপোর্ট জমা পড়বে নবান্নে। তারপর দোষীদের কী শাস্তি হবে, তার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর।

গত বুধবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে যায় অন্তত ২৬টি টসিলিজুম্যাব ইঞ্জেকশন। করোনা (Coronavirus) চিকিৎসায় এই ওষুধ জীবনদায়ী। এর বাজারমূল্য প্রায় ১১ লক্ষ টাকা। শুধুমাত্র ‘স্পেসিমিন একজমিনেশন ফর্ম’ (ল্যাবরেটরিতে রোগীর নমুনা পরীক্ষা করতে পাঠানোর কাগজ) থেকে ওই ওষুধ চেয়ে কীভাবে লেখা হল এবং তা স্টোর থেকে দেওয়াও হল, তা নিয়ে রীতিমতো চাপানউতোর শুরু হয়ে যায় মেডিক্যাল কলেজে। রেশ পৌঁছয় স্বাস্থ্যভবনে। অভিযোগ, এক মহিলা নিজেকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার নার্স পরিচয় দিয়ে অন্য এক ভদ্রমহিলাকে ‘দিদি’ সম্বোধন করছেন। বলছেন, যে ২৬টি টসিলিজুম্যাব ইঞ্জেকশন নিয়েছেন তা রিসিভ করে নিতেন। উত্তরে ওই ভদ্রমহিলা বলেছেন, তিনি সোমবার আসবেন। করে দেবেন। ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় হইহই শুরু হতেই মুখ্যমন্ত্রীও কড়াভাবে যথাযথ তদন্তের নির্দেশ দেন।


স্বাস্থ্যভবনের তরফে এমন গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে গোটা ঘটনাটি ঠিক কী, তা জানার জন্য জোড়া তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়। প্রথমটি ৭ জনের এবং দ্বিতীয়টি ৩ জনের। ঘটনার সপ্তাহখানেকের মধ্যেই রবিবার জমা পড়ল জোড়া তদন্ত কমিটির রিপোর্ট। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, রিকুইজিশন (Requisition) ছাড়া, নিয়ম বহির্ভূতভাবেই মেডিক্যাল কলেজ থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে ২৬টি টসিলিজুম্যাব। এখানে প্রশ্ন উঠছে, এ ধরনের জীবনদায়ী ওষুধ হাসপাতাল থেকে নেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম ঠিক কী? বলা হচ্ছে, সিসিইউ-তে থাকা যে রোগীর জন্য ওই ইঞ্জেকশন প্রয়োজন, তাঁর নাম-ঠিকানা লিখে সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার কিংবা সিসিইউ স্পেশ্যালিস্ট ডাক্তারের সই করা নথির ভিত্তিতে ইঞ্জেকশন পাওয়া যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে মহিলা মেডিক্যাল অফিসারের স্বাক্ষর নিয়েই সমস্যা। একসঙ্গে এতগুলো টসিলিজুম্যাব প্রয়োজন হল কেন?


আর তাতেই নিয়মভঙ্গের ছায়া দেখছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এই রিপোর্ট এবার নবান্নে পাঠানো হবে। সূত্রের খবর, নিয়ম ভাঙায় জড়িতদের কী শাস্তি হবে, তা ঠিক করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.