করোনা লড়াইয়ে একমাত্র অস্ত্র ভ্যাকসিন। মারণ এই ভাইরাসের রাশ টানতে টিকাকরণের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। দেশবাসীর সুরক্ষায় বর্তমান ভারতে অক্সফোর্ডের কোভিশিল্ড ও ভারত বায়োটেকের কো-ভ্যাক্সিন দেওয়া হচ্ছে।। জীবনদায়ী এই প্রতিষেধক দুটোই ভারতে তৈরী। তবে রুশ ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি (Sputnik V) ছাড়পত্র দিয়েছে DCGI। ভারতে জরুরি অবস্থায় ব্যবহারের জন্য ডঃ রেড্ডির ল্যাব (DRL) বিতরণ করার অনুমোদন পেয়েছে। রাশিয়ার গামেলেয়া ইন্সটিটিউট ভাইরোলজি জানিয়েছে স্পুটনিক ভি ক্লিনিকাল ট্রায়ালে ৯১.৬ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে। ভ্যাকসিনকে আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্যাম-কোভিড-ভ্যাক (Gam-Covid-Vac) হিসাবেও ডাকা হয়।
বিশ্বব্যাপী যে ভাসাসিনগুলো অনুমোদন পেয়েছে তার সবগুলোই দুটো ডোজ নিতে হয়। কিন্তু রাশিয়ার আর এক ভ্যাকসিন স্পুটনিক লাইট (Sputnik Light) একটা ডোজেই কামাল দেখাবে, দাবি করেছেন গবেষকরা। স্পুটনিক লাইট নামে পরিচিত এক-ডোজের ভ্যাকসিনটি ভারতের মতো বিশাল জনসংখ্যার দেশে এক সঙ্গে দ্বিগুণ লোককে দেওয়া যাবে। তারফলে ভ্যাকসিন গতি বৃদ্ধি পাবে। মে মাসে রাশিয়ায় স্পুটনিক লাইটকে জরুরী ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ৭৪.৯ শতাংশ। ভারতে এটি জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের বিষয়ে আলোচনা চলছে।
অ্যাডেনোভাইরাসকে ভেক্টর হিসাবে ব্যবহার করে এই ভ্যাকসিন তৈরী হয়েছে। শরীরে প্রবেশ করলে করোনার মত স্পাইক প্রোটিন তৈরী করে শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে বাড়িয়ে তোলে। স্পুটনিক ভাইরাস যে প্রোটিন বানায় তার মধ্যে জেনেটিক তথ্য থাকে। এই প্রোটিনের খোঁজ পেলে শরীরের ইমিউন কোষ সক্রিয় হয়ে ওঠে। সংক্রামক ভাইরাল প্রোটিন কেমন তা চিনে নেয় এবং সঠিক প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। স্পুটনিক লাইটও একই ধরণের ডিজাইনে কাজ করে এবং অ্যাডেনোভাইরাসকে ভেক্টর হিসাবে ব্যবহার করে স্পাইক প্রোটিনগুলির কোড বহন করে সংযোগ স্থাপন করে।
প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী ২১ দিনের ব্যবধানে স্পুটনিক ভি-এর দুটি ডোজ দেওয়া হয়। গামেলেয়া ইন্সটিটিউট ঘোষণা করে যে স্পুটনিক ভি এর দুটি ডোজ কার্যকারিতা ৯১ শতাংশ, প্রথম ডোজ নেওয়ার পর এর কার্যকারিতা ৭৯.৪ শতাংশ। তবে কতদিন এর কার্যকারিতা থাকবে সে ব্যাপারে স্পষ্ট নয়। ভারত ছাড়া ৬৫টি দেশে এই ভ্যাকসিনের জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে। তবে রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে তেমন কার্যকর নয়। রাশিয়ান ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের প্রধান কিরিল দিমিত্রিভ দাবি করেছেন যে, স্পুটনিক লাইট সমস্ত ভ্যারিয়েন্টের উপর কার্যকর।
স্পটনিক ভি, মে মাসে ডিআরএল (DRL) দ্বারা চালু হয়েছে, ডোজ প্রতি ৯৪৮টাকা, জিএসটি নিয়ে দাম পড়ছে ৯৯৫ টাকা ৫০ পয়সা। দ্বিতীয় ব্যয়বহুল ভ্যাকসিন। অপরদিকে স্পুটনিক লাইট যা ভারতে অনুমোদিত হয়নি এখনও তার দাম প্রায় ১০ ডলার ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় 730 টাকা হতে পারে।