হাসপাতালের মর্গে রাখা দেহ থেকে ইঁদুরের চোখ খুবলে নেওয়া নতুন কিছু নয়। তবে করোনা আবহে এমন ঘটনা রীতিমতো আতঙ্কের। আর সেটাই ঘটেছে মেডিক্যাল কলেজের (Calcutta Medical College) মর্গে। আর সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই উঠছে প্রশ্ন, এর ফলে সংক্রমণ ছড়াবে না তো?
জানা গিয়েছে, মেডিক্যাল কলেজের এই মর্গ (Morgue) শতাব্দী প্রাচীন। ধেঁড়ে ইদুরের উৎপাতে মর্গের কর্মচারীরাও নাজেহাল থাকেন। সূত্রের খবর, সম্প্রতি করোনায় বেশ কিছু মৃতের মাংস খুবলে নিয়েছে ইঁদুর। এর আগেও মৃতদেহের চোখ, কান, নাক বা ঠোঁটের অংশবিশেষ ইঁদুরের (Rat) পেটে যাওয়ার নজির রয়েছে। মর্গের মাটির নীচে রীতিমতো সুড়ঙ্গ তৈরি করে ফেলেছে ইঁদুর–বাহিনী। ক্যান্টিন ও মর্গের মাটির নিচেই ধেড়ে ইঁদুরের উৎপাত সব চেয়ে বেশি। তারা আবার প্রবল মাংসাশী! মেডিক্যাল কলেজের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, ‘‘মর্গে ধেড়ে ইঁদুরের দল চলে আসে দেহাংশের লোভে। অ্যালুমিনিয়ামের পাত তো বটেই, লোহা পর্যন্ত কেটে ফেলে তারা।”
করোনায় মৃতদের দেহ সংক্রমণের ভয়ে পরিবারের হাতে দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু ইঁদুর যদি করোনায় মৃতের মাংস নিয়ে টানাটানি করে। তবে উপায়? হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘‘প্রচুর ইঁদুর রয়েছে। মর্গে ইঁদুর থাকা নতুন কিছু নয়। সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। স্যানিটাইজ পর্ব শেষ হতে সামান্য সময় লাগবে।’’
ইঁদুরের দৌরাত্ম্য আটকাতে জরুরি ভিত্তিতে মর্গের সংস্কারও শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য ভবন ও মেডিকেল কলেজ সূত্রে খবর, ইঁদুর সংক্রান্ত এই তথ্য স্বাস্থ্য ভবনের কাছেও গিয়েছে। স্যানিটাইজের কারণে মৃতদেহ আর মর্গে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সুপার স্পেশালিটি বিল্ডিং-এর ফার্স্ট ফ্লোর এবং গ্রীন বিল্ডিংয়ের ফাস্ট ফ্লোরের নির্দিষ্ট এসি রুমে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা (Covid-19) চিকিৎসার ওই নির্দিষ্ট দুটি বিল্ডিংয়ের একটি করে ঘর আপাতত দেহ রাখার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। কোনও ভাবে যাতে সংক্রমণ না ছড়িয়ে পড়ে, সব দিক বিবেচনা করে অতি দ্রুততার সঙ্গে সংস্কার চলছে।