ওমিক্রনে আক্রান্ত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ,নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানালেন ৫ শিক্ষণীয় বিষয়

মহামারীর শুরু থেকেই অসংখ্য করোনাভাইরাস রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন। প্রাথমিকভাবে বছরদুয়েক ধরে তাঁকে কাবু করতে পারেনি করোনা। সম্প্রতি অবশ্য ওমিক্রনে আক্রান্ত হন মার্কিন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ফাহিম ইউনুস। তারইমধ্যে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে পাঁচটি ‘শিক্ষণীয় বিষয়’ তুলে ধরেন তিনি।

আমেরিকার মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান বলেন, ‘ব্যক্তিগত খবর: ওমিক্রন থাবা বসিয়েছে আমার শরীরে। দু’সপ্তাহ আগে আমার উপসর্গ দেখা দেয় এবং রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আমি যে পাঁচটি জিনিস শিখেছি, তা সকলের সামনে তুলে ধরছি। আশা করছি, আপনাদের কাজে দেবে সেগুলি।’ট্রেন্ডিং স্টোরিজ

সেই পাঁচটি বিষয় কী কী, তা দেখে নিন –

১) এন৯৫ বা কেএন৯৫ মাস্কের গুরুত্ব: করোনাভাইরাসকে রুখতে মাস্কের উপর সবথেকে বেশি গুরুত্ব আরোপ করেছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক। ‘প্রথম শিক্ষণীয়’ হিসেবে তিনি বলেন,  ‘মাস্ক কাজে দেয়। গত দু’বছরে আমি ১,০০০ বারের বেশি করোনাভাইরাস রোগীদের আশপাশে থেকেছি এবং মাস্ক বা পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইক্যুইমেন্টের (পিপিই) জন্য সংক্রমিত হইনি। মাস্কহীন পারিবারিক অনুষ্ঠানের মুখে পড়ে গিয়েছিলাম এবং করোনায় আক্রান্ত হয়ে যাই। তাই, মাস্ক কাজ করে। যদি পারেন তো এন৯৫ বা কেএন৯৫ মাস্ক পরুন।’

২) করোনা টিকার গুরুত্ব: মার্কিন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ‘যখন পাঁচদিনের মধ্যে (মাস্ক পরে) করোনা রোগী কাজে ফিরে আসেন এবং ভেন্টিলেটরে জীবনের জন্য লড়াই না করে টুইটারে নিজের কাহিনি শোনান, তখন আপনি বুঝতে পারেন যে টিকা এবং বুস্টার ডোজ কাজ করেছে। আমি টিকাকে ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাচ্ছি ঈশ্বরকে।’

৩) কোনও স্টেরয়েড নিতে হয়নি: আমেরিকার মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান জানান, মৃদু অসুস্থ করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য যে স্টেরয়েড, অ্যান্টিবডি, মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি বাধ্যতামূলক, তা মোটেই নয়। তিনি কোনওটাই নেননি। 

মার্কিন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমার মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি, স্টেরয়েড, অ্যান্টিলডি বা প্যাক্সলোভিডরের প্রয়োজন হয়নি। উপসর্গের ভিত্তিতে চিকিৎসা পদ্ধতি (যা আমি আগে অনেকবার জানিয়েছি) যথেষ্ট ছিল। অবশ্যই আইভারমেটিন, হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন (Hydroxycholroquine), জিঙ্ক ব্যবহার করিনি।’ তবে সেইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘যাঁরা গুরুতর অসুস্থ হন, তাঁদের ক্ষেত্রে চিকিৎসার ধরন অন্য নয়।’

৪) মানসিক বিষয়: করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অস্ত্র হিসেবে মানসিকতার উপরও জোর দিয়েছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘শেষটা মনে করে রাখবেন। কোভিড হোক বা না হোক, নিজের মাঝেমধ্যেই নশ্বরতার বিষয়টি ভাববেন।’ সঙ্গে থিনি যোগ করেন, ‘এটা আমাদের সাহসী, কার্যকরী সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথ প্রশস্ত করে দেয়।’

৫) টিকা নিন, এন৯৫ বা কেএন৯৫ মাস্ক পরুন এবং নিজের ঝুঁকি সহন করার ক্ষমতা জানান: ‘পঞ্চম শিক্ষণীয়’ হিসেবে আমেরিকার মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান জানান, কোনও ব্যক্তিকে ঝুঁকি সহন করার ক্ষমতা জানতে হবে। সঙ্গে দিতে হবে টিকা। পরতে হবে এন৯৫ বা কেএন৯৫ মাস্ক। 

তিনি বলেন, ‘টিকা নিন। কেএন বা এন৯৫ মাস্ক পরুন। তারপরও যদি করোনা হয়, তাহলে আপনি পুরোপুরি সেরে ওঠার সম্ভাবনা বেশি। ওই পারিবারিক জমায়েত আমি (করোনা আক্রান্ত হওয়ার) ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু আপনার ঝুঁকি সহনের ক্ষমতা আলাদা হতে পারে। বিজ্ঞান মেনে চলুন। তারপর আপনার হৃদয় অনুসরণ করুন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.