Omicron Variant: একে একে তালিকায় জুড়ছে নতুন নাম, টের পাওয়ার আগেই কি বহু দেশে ওমিক্রন

করোনার ওমিক্রন স্ট্রেন নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সতর্কবার্তা জারি করার আগেই নেদারল্যান্ডসে পৌঁছে গিয়েছিল ‘সন্দেহজনক’ ভেরিয়েন্টটি। আজ এ কথা জানিয়েছে সে দেশের স্বাস্থ্য দফতর। একই সন্দেহ জার্মানি, বেলজিয়াম ও নাইজিরিয়ার। এর থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, বিশ্ববাসী বুঝে ওঠার বহু আগেই হয়তো একাধিক দেশে ছড়িয়েছে ওমিক্রন।

আমেরিকার প্রেসিডেন্টের চিকিৎসা বিষয়ক মুখ্য উপদেষ্টা অ্যান্টনি ফাউচি আজ জানিয়েছেন, সে দেশেও এক ব্যক্তির শরীরে ওমিক্রনের হদিস মিলেছে। এই প্রথম আমেরিকায় করোনার এই নতুন ভেরিয়েন্টের খোঁজ মিলল। ক্যালিফর্নিয়ার ওই বাসিন্দা গত ২২ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরেছিলেন। ২৯ নভেম্বর তাঁর কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। ফাউচি আরও জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির কোভিডের টিকা নেওয়া ছিল, তাঁর শরীরে মৃদু উপসর্গ রয়েছে।

নেদারল্যান্ডসের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর পাবলিক হেল্‌থ’ (আরআইভিএম)-এর বক্তব্য, ‘‘১৯ নভেম্বর ও ২৩ নভেম্বর, এই দু’দিন সংগৃহীত দু’টি নমুনায় ওমিক্রনের সন্ধান পেয়েছি আমরা। তবে সংক্রমিতেরা দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিলেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।’’ আরআইভিএম এ-ও জানিয়েছে, পরের ঘটনাটির সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার যোগ স্পষ্ট। অর্থাৎ, ২৬ নভেম্বর আমস্টারডমের বিমানবন্দরে অন্তত ১৪ জন নতুন স্ট্রেনটি নিয়ে ঢুকেছিলেন। এঁদের মধ্যে কিছু লোক ফিরেছিলেন জোহানেসবার্গ থেকে। কিছু এসেছিলেন কেপ টাউন থেকে। তারা জানিয়েছে, প্রত্যেককে চিহ্নিত করা হয়েছে।


দক্ষিণ আফ্রিকা ওমিক্রন স্ট্রেনের বিষয়ে প্রথম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-কে রিপোর্ট করেছিল ২৪ নভেম্বর। নেদারল্যান্ডস প্রশাসন এত দিন জানত, এর দু’দিন পরে ২৬ নভেম্বরই দক্ষিণ আফ্রিকা ফেরত ওই দু’টি বিমানে ওমিক্রনের প্রবেশ ঘটেছিল। কিন্তু এখন তারা জানতে পেরেছে, ১৯ নভেম্বরই স্ট্রেনটি ছিল দেশে। আরআইভিএম জানিয়েছে, খুব শীঘ্র এ সংক্রান্ত একাধিক গবেষণা শুরু হবে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। সাম্প্রতিক কালে সংগৃহীত নমুনাগুলি নতুন করে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ফেরত দু’টি বিমানে মোট ৬১টি জন ছিলেন। সকলকে কোয়রান্টিন করা হয়েছে। তাঁরা কাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন, সে বিষয়েও নজরদারি চলছে।

আজ জার্মানি, বেলজিয়ামও জানিয়েছে, তাদের সন্দেহ, ২৪ নভেম্বরের আগেই এই দুই দেশে ওমিক্রন মিলেছিল। জার্মানি জানিয়েছে, ২১ নভেম্বর ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরে পৌঁছনো এক যাত্রীর দেহে স্ট্রেনটি মিলেছে। বেলজিয়ামে ২২ নভেম্বর সংগ্রহ করা নমুনায় ওমিক্রন পাওয়া গিয়েছে। তবে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ওমিক্রন স্ট্রেন ধরা পড়েছে নেদারল্যান্ডসে— মোট ১৬টি। ডাচ প্রশাসন অবশ্য দাবি করেছে, তাদের মতো সব দেশই যদি পুরনো নমুনা পুনরায় পরীক্ষা করে দেখে, ঠিকই দেখা যাবে আরও অনেক ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে। বেলজিয়ামে যেমন, ওমিক্রন ধরা পড়েছে ২২ নভেম্বর সংগ্রহ করা একটি নমুনায়। যিনি সংক্রমিত, তাঁর অনেক দেরিতে উপসর্গ দেখা দেয়। অন্তত ১১ দিন আগে তিনি মিশর থেকে তুরস্ক হয়ে দেশে ফিরেছিলেন।

আফ্রিকারই আর এক দেশ নাইজিরিয়া আজ জানিয়েছে, অক্টোবর মাসেই এক পর্যটকের নমুনায় ওমিক্রন মেলে। অর্থাৎ তারাও জানিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকা ঘোষণা করার আগেই সে দেশে ভেরিয়েন্টটি ছড়িয়েছে। দেশের ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল’ জানিয়েছে, নাইজিরিয়ায় বেড়াতে এসে কোভিড পজ়িটিভ ধরা পড়া পর্যটকদের থেকে সংগ্রহ করা নমুনা পুনরায় সিকোয়েন্সিং করা হচ্ছে। তাতেই বিষয়টি ধরা পড়ে। ওই পর্যটকেরা কোন দেশের, তা অবশ্য প্রকাশ করেনি নাইজিরিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.