রাজ্যে বাড়ছে মিউকরমাইকোসিস বা চলতি কথায় ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তের সংখ্যা। কিন্তু সেই তুলনায় এই রোগের ওষুধ অ্যামফোটেরিসিন বি-এর পর্যাপ্ত মজুত নেই সরকার নির্ধারিত একাধিক স্টকিস্টের কাছে। ওষুধ জোগানের বাস্তব পরিস্থিতি ক্ষতিয়ে দেখতে আনন্দবাজার ডিজিটাল কথা বলে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ওষুধের স্টকিস্টদের সঙ্গে। তাদের সাফ কথা, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ওষুধ এখনই পাওয়া যাবে না। একাধিক হাসপাতাল নার্সিংহোম থেকে ফোন আসছে ওষুধের জন্য, সবাইকে কিছুদিন অপেক্ষা করতে বলা হচ্ছে।
নির্দেশিকা জারি করে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তদের সম্পর্কে তথ্য স্বাস্থ্য ভবনে জানানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বুধবার ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ওষুধ বিক্রিতেও বিধিনিষেধ জারি করেছে স্বাস্থ্য ভবন। শুধুমাত্র হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমগুলিকেই ওষুধ বিক্রি করা যাবে। চিকিৎসক বা হাসপাতালের প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে কোনও ব্যাক্তি এই ওষুধ কিনতে পারবেন না। হঠাৎ রাজ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের প্রকোপ বাড়ায় ওষুধের এই সঙ্কট বলে জানান এক স্বাস্থ্য আধিকারিক। মধ্য কলকাতার অ্যামফোটেরিসিন বি-এর এক স্টকিস্ট জানান ‘‘প্রতিদিনই গড়ে ২০টার বেশি ফোন আসছে অ্যামফোটেরিসিন বি-র জন্য। কিন্তু আমাদের কাছে গত কয়েক দিন ধরেই ওষুধ নেই। ওষুধ না থাকলে হাসপাতালকে দেব কী ভাবে।’’ নিউটাউনের আরও একজন স্টকিস্ট জানান ‘‘ কিছু হাসপাতাল ৫০০-এর উপর ওষুধ চেয়েছে। কিন্তু ওষুধের জোগান স্বাভাবিক না থাকায় আমরা কবে হাসপাতালগুলোকে ওষুধ দিতে পারব সেই তারিখও বলতে পারছি না।’’ দক্ষিণ কলকাতার এক স্টকিস্ট জানান,‘‘আগে মাসে একটা ওষুধও বিক্রি হত না। এখন রোজ একাধিক হাসপাতাল এই ওষুধের খোঁজ করছে। কিন্তু ১৫ দিন ধরে আমাদের স্টকে কোনও ওষুধ নেই।’’ ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের রোগীদের চিকিৎসা চলছে শহরের এমন এক বেসরকারি হাসপাতালের সিইও জানান ‘‘স্টকে থাকা ওষুধ দিয়ে এক রোগীর চিকিৎসা চালাচ্ছি। দিন কয়েক আগেই আমরা ওষুধ চেয়ে পাঠিয়েছি। কবে পাওয়া যাবে বলতে পারছি না।’’
শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্যে ৩০ জন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত এবং ৫৯ জন উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন। রাজ্যে কত জন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হচ্ছেন তা জানানো হচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রককে। সেই মত ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের চিকিৎসায় ‘অ্যামফোটেরিসিন বি’ ওষুধ কেন্দ্র সরকারের থেকে চাওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর। অ্যামফোটেরিসিন বি-র মজুদ প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকায় হাসপাতালগুলিতে অল্প অল্প করে একাধিক দফায় ওষুধ পাঠানো হচ্ছে।