কোন ভ্যাক্সিন কতটা কার্যকর, জেনে নিন তথ্য

৬০ বছরের বেশি বয়স্কদের টিকা দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। কো- মোর্বিডিটি থাকলেও তারাও টিকা পাবেন এই পর্যায় থেকে। দেশের প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই নিয়েছে কোভ্যাক্সিন টিকা। কিন্তু কোন ভ্যাকসিনটি কেমন? কীভাবে তা কাজ করে তা কী জানেন?

ভারত বায়োটেক তৈরি করেছে কোভ্যাক্সিন। গত ২৪ বছ ধরে কাজ করছে এই একটি টিকা উৎপাদনকারী সংস্থা। এই কোভ্যাক্সিন উদ্ভাবন করেছে। তারা এযাবৎ ১৬টি টিকা তৈরি করেছে এবং ১২৩টি দেশে তা রফতানি করে থাকে। কোভ্যক্সিন টিকা তৈরি হয়েছে মৃত করোনাভাইরাস দিয়ে। যাকে বলা হয় ‘ইনএ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিন’। এটি ইনজেকশন আকারে মানুষের শরীরে দেওয়া হচ্ছে। ভারত বায়োটেক এ জন্য করোনাভাইরাসের একটি নমুনা ব্যবহার করেছে , যা পৃথক করেছে ভারতেরই ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি।

কোভ্যাক্সিন মানব দেহে দেওয়া হলে, রোগপ্রতিরোধী দেহকোষগুলো মৃত করোনাভাইরাসটিকে ‘চিনতে পারে’ এবং দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জাগিয়ে তোলে । তখন ভাইরাসটির বিরুদ্ধে দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে থাকে। কোভ্যাক্সিন কোভ্যাক্সিন টিকার দুটি ডোজ নিতে হয়। চার সপ্তাহের ব্যবধানে নিতে হয় এই দুই ডোজ। ভ্যাক্সিনটি সংরক্ষণ করতে হয় ২ ডিগ্রি থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়। ২০২১ সালের শেষ নাগাদ ৭০ কোটি টিকা তৈরি করা লক্ষ্য ভারত বায়োটেকের।

কতটা কার্যকর কোভিশিল্ড ? অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটি স্থানীয়ভাবে তৈরি করছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট , যারা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক। ভারতে কোভিশিল্ড নামে পরিচিত এ টিকাটি সাধারণ সর্দিজ্বরের ভাইরাসের একটি দুর্বল সংস্করণ থেকে তৈরি। এটি শিম্পাঞ্জির দেহে হয় এবং এর নাম এডিনোভাইরাস। টিকা তৈরির জন্য এটাকে এমনভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে যাতে এটা দেখতে অনেকটা করোনাভাইরাসের মত হয় – তবে তা মানবদেহে কোন অসুস্থতা তৈরি করতে পারে না।

এটা দেওয়া হলে মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা অ্যান্টিবডি তৈরি করতে শুরু করে এবং যে কোনওরকম করোনাভাইরাস দেহে ঢুকলে তাকে আক্রমণ করতে শিখে যায়। চার থেকে ১২ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজটি দেয়া হয়, এবং এটি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যায় , ফলে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার চেয়ে এটি সহজে বিতরণযোগ্য। আন্তর্জাতিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গিয়েছে , অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটি প্রথমে আধা ডোজ এবং এবং পরে পুরো ডোজ দেওয়া হলে তার কার্যকারিতা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত হয়।

প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের মধ্যে দীর্ঘ বিরতি দিলে তার কার্যকারিতা বেড়ে যেতে দেখা গেছে, এবং অপ্রকাশিত উপাত্তে আভাস পাওয়া যায় যে তা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর হতে পারে। সেরাম ইনস্টিটিউট বলছে, কোভিশিল্ড উচ্চ মাত্রায় কার্যকর এবং ব্রাজিল ও আমেরিকায় তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের তার সমর্থন মিলেছে।

সেরাম ইনস্টিটিউট প্রতিমাসে পাঁচ কোটি কোভিশিল্ড টিকা তৈরি করছে। সেই হিসাব অনুযায়ী এই বছরের শেষে তাদের ৬০ কোটি টিকাকরণ হওয়া সম্ভব। ৭০ কোটি করবে ভারত বায়োটেক। ওই ৭০ ও এই ৬০ মিলিয়ে ১৩০ কোটি মানুষের ভ্যাক্সিনেশন শেষ হওয়া উচিৎ চলতি বছরেই। এবার কে কোন ভ্যাক্সিন নিচ্ছে সেটার উপরে পুরঅ বিষয়টি নির্ভরশীল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.