কুষ্ঠ রোগীদের ফ্রিতে জটিল অপারেশন। কুষ্ঠ রোগে ভুগে বদলে গিয়েছিলো শরীর। সময় মতো চিকিৎসা না হওয়ায় অঙ্গবিকৃতির শিকার হয়েছিলেন অনেকেই। হারিয়ে ফেলেছিলেন কর্মক্ষমতা। কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, দার্জিলিং এই তিন জেলার ২৮ জন রোগীকে চিহ্নিত করে তাদের স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানোর জন্য রি-কন্সট্রাকটিভ সার্জারির ব্যবস্থা করলো স্বাস্থ্য দফতর।
এই উপলক্ষে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দু’দিনের শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। প্রথম দিনে ১৮ জন রোগীর রি-কনস্ট্রাকটিভ সার্জারী করেন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ থেকে আসা আট জনের মেডিক্যাল টিম। নেতৃত্বে ছিলেন বিশিষ্ট প্লাস্টিক সার্জেন ডা: রূপ নারায়ন ভট্টাচার্য।
মালবাজারের বাসিন্দা ডলি রায় নামে এক রোগীর আত্মীয় জানালেন তাঁর পিসির হাত ও পায়ের আঙুলে সমস্যা। আঙুলগুলো ক্ষয়ে গিয়েছে। গ্রামীন স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে তাঁদের এখানে পাঠিয়েছে।
বিশ্বজিৎ রায় নামে এক রোগী জানালেন তিনি কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত। তাঁকে ডাক্তার অপারেশন করার কথা বলেছেন। বাইরে অপারেশন করা ব্যয় সাপেক্ষ। তাই তিনি হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছেন।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাক্তার অসীম হালদার বলেন কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়ে যাদের হাত, পা, চোখ নষ্ট হতে বসেছে এমন রোগীদের আজ অপারেশন করা হচ্ছে।
ডাক্তার রূপ নারায়ণ ভট্টাচার্য বলেন, ‘কুষ্ঠ আক্রান্তরা প্রায়ই সামাজিক লাঞ্চনার শিকার হন। রি-কনস্ট্রাকটিভ সার্জারী হচ্ছে পুনর্গঠন। এই সার্জারীর মাধ্যমে কুষ্ঠ রোগীরা আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাবেন। আবার কর্মক্ষমতা ফিরে পাবেন। তাদের আর লাঞ্চিত হতে হবে না’।
তিনি আরও বলেন, ২০০৫ সাল থেকে রাজ্যের চারটি জেলায় সার্জিক্যাল শিবির করে কুষ্ঠ রোগীদের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার কাজ করে চলেছেন তারা।
স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিক ডাক্তার সৌমিত্র প্রামাণিক বলেন রাজ্যের চার জেলায় বছরে গড়ে ১০০ জন কুষ্ট আক্রান্তকে এই জাতীয় অপারেশনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
বাকুড়া, ঝাড়গ্রাম, মালদা ও জলপাইগুড়ি এই চার যায়গায় ক্যাম্প করে এই অপারেশন করা হয়। যারা এখানে আসেন তাঁদের কোনও খরচ দিতে হয়না। উলটে স্বাস্থ্য দফতর তাঁদের ১২০০০ টাকা করে দেয়।