উদ্যোগ সরকারি এবং বেসরকারি স্তরে, তিন কোটি টিকা কেনার লক্ষ্যমাত্রা নিল রাজ্য

তিন কোটি প্রতিষেধক জোগাড় করতে পরিকল্পনা শুরু করল রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, সরকার যেমন এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিচ্ছে, বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও একই পদক্ষেপ করার সুপারিশ দিচ্ছে প্রশাসন।

সোমবার নির্বাচন কমিশনের থেকে আগাম এবং লিখিত অনুমতি নিয়ে প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তিন কোটি প্রতিষেধক কেনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রাজ্য। এ জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পাশাপাশি প্রতিষেধক প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকেও চিঠি দেবে সরকার। স্বাস্থ্য দফতরের সূত্র জানাচ্ছে, তিন কোটির মধ্যে ২ কোটি প্রতিষেধক নিজেরা রাখবে সরকার। বাকি এক কোটি প্রতিষেধক বেসরকারি হাসপাতালগুলির জন্য ভাবা হয়েছে। এই প্রতিষেধক পাওয়া গেলে রাজ্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষের প্রতিষেধক নিশ্চিত করা যাবে বলে স্বাস্থ্য-কর্তাদের আশা। সূত্রের দাবি, প্রতিষেধক উৎপাদক সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে টিকা আনতে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও অনুমতি দিয়েছে রাজ্য।

পাশাপাশি, স্বাস্থ্য-কর্তারা আশ্বস্ত করছেন, রাজ্যে অক্সিজেনের সংকট এখনই নেই। এখন রাজ্যে তরল অক্সিজেন উৎপাদিত হচ্ছে দৈনিক ৪৯৭ মেট্রিকটন। সেখানে চাহিদা দৈনিক ২২৩ মেট্রিকটন। রাজ্যে এই মুহূর্তে অক্সিজেন বরাদ্দ রয়েছে প্রতিদিন ৩১৮ মেট্রিকটন। তার উপরে কেন্দ্রীয় সরকার যে পরিমাণ অক্সিজেন আমদানি করবে, তার ১০% দিতে কেন্দ্রকে অনুরোধ করেছে রাজ্য। সূত্রের খবর, গুজরাতের জামনগর থেকে অক্সিজেনের দু’টি ট্যাঙ্কার আসতে চলেছে রাজ্যে।

স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, ১১২টি কোভিড হাসপাতালে পাইপ-মাধ্যমে অক্সিজেন পরিষেবার সুবিধা রয়েছে। তার সঙ্গে আরও অন্তত ২৫টি হাসপাতাল যুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি, ৯৩টি হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির অনুমতি কেন্দ্রের থেকে চেয়েছিল রাজ্য। কেন্দ্রের ছাড়পত্রে ৫টি হাসপাতালে সেই পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে। তিনটিতে কাজ শেষ, দু’টির কাজ চলছে। পাইপ-মাধ্যমে অক্সিজেন পরিষেবা যেখানে নেই, সেখানে তা চালু করার জন্য স্বাস্থ্য এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। এক স্বাস্থ্য-কর্তার কথায়, ‘‘অক্সিজেনের জোগানে কোনও সমস্যা নেই। সিলিন্ডার এবং পরিবহণের কিছু জটিলতা থাকলেও তা দ্রুত মিটিয়ে ফেলা হবে। ফলে মাইক্রো এবং ম্যাক্রো পরিস্থিতির মধ্যে সামঞ্জস্য থাকবে।’’


অক্সিজেন এবং ওষুধের বেআইনি মজুত রুখতে আগেই পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন। সূত্রের খবর, কোভিডের অন্যতম ওষুধ রেমিভির অবৈধ ভাবে বিক্রির অভিযোগে দু’জনকে আটক করা হয়েছে। এ দিনই কলকাতা পুলিশ, এনফোর্সমেন্ট বিভাগ এবং ড্রাগ কন্ট্রোলের অফিসারেরা নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে হানা দিয়ে একটি ওষুধের দোকানের কর্মী এবং আর এক ব্যক্তিকে ধরে ফেলে। অভিযোগ, বিনা রশিদে ২১ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই ওষুধ বিক্রির চেষ্টা হচ্ছিল। পার্কস্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.