দীর্ঘ টালবাহানার পর শেষ পর্যন্ত ভারত-চিন সেনার বৈঠকের দিন স্থির হল। জানা গিয়েছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর দুই দেশের সংঘাত নিয়ে আলোচনা করতে আগামী ১২ জানুয়ারি ফের মুখোমুখি হবে ভারত-চিন সেনার আধিকারিকরা। লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের লাদাখ সেক্টরের মূল সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলি থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা করতেই এই বৈঠক হবে বলে জানা গিয়েছে। আশা করা হচ্ছে হটস্প্রিং এলাকায় চলমান অস্থিরতা কমানোর উপায় বেরিয়ে আসবে এই বৈঠক থেকে।
সীমান্ত সংঘাতের আবহে ২০২০ সালের মে মাসে দুই দেশের আলোচনা শুরু হয়েছিল। এরই মাঝে গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় দুই দেশএর সেনার। ভারতের ২০ জন সেনাকর্মী শহিদ হন সেই সংঘর্ষে। চিনেরও প্রায় ৪০ জন সেনাকর্মী হতাহত হন। তবে এরপরও শীমান্তে শান্তি ফেরাতে দফায় দফায় বৈঠক চালিয়ে গিয়েছে দুই দেশ। তবে সমাধান সূত্র এখনও বের হয়নি। এই আবহে পরবর্তী আলোচনার দিন স্থির করা নিয়ে দুই দেশ ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে পারছিল না। তবে শেষমেষ আলোচনায় বসার দিন স্থির করতে সক্ষম হল দুই দেশ।ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
জানা গিয়েছে, চুশুলে দুই দেশের সেনা বৈঠকে বসবে ১২ জানুয়ারি। এই বৈঠকটি দুই দেশের সেনার মধ্যকার ১৪তম বৈঠক হবে। এর আগে ১৩তম বৈঠকটি হয়েছিল গতবছর ১০ অক্টোবর। তবে সেই বৈঠকে চলমান অস্থিরতা কমানোর ক্ষেত্রে কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি। এরপর থেকে ভারতের তরফে একাধিক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল চিনকে। যদিও সেই সব প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে কোনও সাড়া দেয়নি চিন।
ভারতের দাবি, ডেপসাং থেকে চুমারের মধ্যকার সমস্ত বিতর্কিত জায়গা নিয়েই আলোচনা করতে হবে বৈঠকে। সার্বিক ভাবে সীমান্তে শান্তি ফেরাতে সব সংঘাতের স্থান থেকে সেনা প্রত্যাহার প্রয়োজন বলে মনে করে ভারত। তবে এই ক্ষেত্রে টালবাহানা বজায় রেখেছে চিন। এমন কি গত ১০ অক্টোবরের বৈঠকে চিনের তরফে কোর কমান্ডার যোগ দেননি। তাঁর বদলে বৈঠকে ছিলেন তাঁর ডেপুটি। এরপর ‘ভারত-চিন ওয়ার্কিং মেকানিজম ফর কন্সাল্টেশন অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন’-এর তরফে বলা হয়েছিল যে যত শীঘ্র সম্ভব ফের দুই দেশের বৈঠক হওয়া উচিত। তবে চিনা সেনা তাতে কর্ণপাত করেনি। বরং অরুণাচলপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গার নামকরণ করে সেখানেও সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরিতে সচেষ্ট হয়েছে বেজিং। এই আবহে দিল্লিও পাল্টা তোপ দেগে চিনকে বলে, অরুণাচলে অবান্তরভাবে জায়গার নামকরণ বন্ধ করে চিনের উচিত লাদাখ নিয়ে সমস্যা মেটানোর জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ করা।