করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠেছেন? কিন্তু সেই সংক্রমণের প্রভাব দীর্ঘদিন থাকতে পারে। নয়া একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, মৃদু উপসর্গ দেখা যাক বা কোনও উপসর্গ দেখা না যাক, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে এমন একটি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, যা শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ঝাঁঝরা করতে সক্ষম। সেই অ্যান্টিবডি শরীরে দীর্ঘদিন থেকে যায়।
‘জার্নাল অফ ট্রান্সলেশনাল মেডিসিন’-এ প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, যে ব্যক্তিরা করোনায় (SARS-CoV-2) আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের শরীরে বিভিন্ন প্রজাতির ‘অটো অ্যান্টিবডি’ তৈরি হয়। যে অ্যান্টিবডি শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ঝাঁঝরা করে দিতে সক্ষম। করোনার সংক্রমণ থেকে পুরোপুরি সেরে ওঠার ছয় মাস পর্যন্ত সেই অ্যান্টিবডি কোনও ব্যক্তির নিজের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এবং কোষে আক্রমণ চালায়। গবেষকরা দাবি করেছেন, তাঁরা আগে থেকেই জানতেন যে গুরুতর করোনা থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের রোগ প্রতিরোধকারী ব্যবস্থা এতটা প্রভাবিত হয়, যেখান থেকে ‘অটো অ্যান্টিবডি’ তৈরি হয়। নয়া গবেষণায় জানা গিয়েছে যে মৃদু উপসর্গ এবং উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও তৈরি হয় সেই অ্যান্টিবডি। ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
সেই গবেষণার অন্যতম বিশেষজ্ঞ জাস্টিনা ফার্ট-ববার জানিয়েছেন, তাঁদের গবেষণা থেকে যে তথ্য মিলেছে, তাতে আরও স্পষ্ট হয়েছে, কেন কোভিড-১৯ ‘অত্যন্ত বিরল রোগ’। তাঁর মতে, সেই গবেষণা থেকে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা ‘দীর্ঘকালীন করোনার’ ভিত্তি হয়ে উঠতে পারে। সেক্ষেত্রে কী কী উপসর্গ থাকে, তা নির্ধারণের ভিত্তিও হতে পারে বলে জানিয়েছেন জাস্টিনা।
গবেষকরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিলেন এবং সেরে উঠেছেন, এমন ১৭৭ জনকে গবেষণার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল। তাঁদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেই রক্তের নমুনার সঙ্গে করোনা মহামারীর আগে সুস্থ মানুষদের রক্তের তুলনা করেন গবেষকরা। তার ভিত্তিতেই শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ঝাঁঝরা করতে সক্ষম অ্যান্টিবডির বিষয়টি জানা গিয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা। সেইসঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন, করোনা টিকা আবিষ্কারের আগে ওই ১৭৭ জন সংক্রমিত হয়েছিলেন। সেই পরিস্থিতিতে এবার তাঁরা দেখবেন যে টিকা নেওয়ার পরও যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও একই ধরনের শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ঝাঁঝরা করতে সক্ষম অ্যান্টিবডি তৈরি হয় কিনা।