টিকা নেওয়ার পর স্বেচ্ছাসেবক অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিশ্বজুড়ে ট্রায়াল বন্ধ হয়েছে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের। অক্সফোর্ডের এই ভ্যাকসিনটি ট্রায়ালের প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপ সাফল্যের সঙ্গে উতরে গিয়েছিল। তাই অনেকেরই ধারণা ছিল, এটিই প্রথম WHO স্বীকৃত করোনার ভ্যাকসিন হতে চলেছে। WHO’র তরফ থেকেও এই ভ্যাকসিনটিকেই সবচেয়ে সম্ভাবনাময় বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু এর মাঝেই ছন্দপতন। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এতে হতাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই। ভ্যাকসিন তৈরির লড়াইয়ে এমন ওঠানামা থাকবেই। সেটাকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের এগোতে হবে।
অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের ট্রায়াল বন্ধ হওয়া নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান গবেষক সৌম্যা স্বামীনাথন (Soumya Swaminathan) বলছেন,”এটা আমাদের সতর্ক করে দিল। আমাদের বুঝতে হবে, কোনও ওষুধের আবিষ্কারের প্রক্রিয়ায় অনেকরকম বাধা বিপত্তি আসবে। এবং আমাদের সেজন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।” তবে স্বামীনাথন বলছেন, এতে হতাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই। এই ধরনের ঘটনা ঘটবেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আরেক কর্তা মাইক রায়ানের (Mike Ryan) মুখে অবশ্য খানিকটা সতর্কতার সুর শোনা গেল। তিনি বলছেন,”আমাদের মনে রাখতে হবে এই লড়াইটা রোগের বিরুদ্ধে। এক সংস্থার বিরুদ্ধে আরেক সংস্থার নয়। বা এক দেশের বিরুদ্ধে আরেক দেশের নয়।” আসলে এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে ভ্যাকসিন তৈরি করা নিয়ে একটা অঘোষিত প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। যাতে মেতেছে রাশিয়া, আমেরিকা, চিনের মতো দেশগুলি। এই প্রতিযোগিতা যে আসলে আমাদের ক্ষতিই করবে, সেটাই এদিন বোঝাতে চাইলেন WHO কর্তারা।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাতে অ্যাস্ট্রোজেনেকার (AstraZeneca) তরফ থেকে জানানো হয়েছে, অপ্রত্যাশিতভাবে একজন ভলান্টিয়ার অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের তৈরি করোনার (COVID-19) টিকার ট্রায়াল সাময়িকভাবে বন্ধ করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, এই টিকা নেওয়ার পর একজন স্বেচ্ছাসেবক অতিরিক্ত জ্বরে কাবু হয়ে পড়েছেন। আর সেজন্যই নিয়ম অনুযায়ী এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল এই মুহূর্তে পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে। অথচ, এতদিন পর্যন্ত মনে করা হচ্ছিল অক্সফোর্ডের (Oxford) এই ভ্যাকসিনই করোনা প্রতিরোধে সবচেয়ে নিরাপদ এবং উপযোগী। প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে সাফল্যের পর সেই ধারণা আরও পোক্ত হয়। সেই অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনই বিশ্ববাসীকে হতাশ করল।