ডেল্টা আক্রমণ ঠেকাতে দাওয়াই দিলেন চিকিৎসক মৈনাক মালহোত্রা


ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপটে এখন কাঁপছে সাড়া বিশ্ব। যার রেশ এসে পড়েছে ভারতেও। অন্যান্য কোভিড স্ট্রেইনের থেকে এই স্ট্রেইন কতটা আলাদা? এই স্ট্রেইনে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা পদ্ধতি কি? এর থেকে বাচ্চারা কতটা সুরক্ষিত? সমস্ত কিছু নিয়ে আলোচনায় আমরি মুকুন্দপুরের ভিজিটিং কনসালটেন্ট তথা ইন্টারনাল মেডিসিনের চিকিৎসক মৈনাক মালহোত্রা।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট কি?

২০২০-র শেষ দিকে ভারতে করোনার অন্য একটি স্ট্রেইন – বি.১.৬১৭.২ খুঁজে পাওয়া যায়। যেটি অনেক বেশি ছোঁয়াচে এবং যে ভ্যারিয়েন্টের দ্বারা আক্রান্তদের ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তির হার অনেক বেশি। দেখা গিয়েছে এই স্ট্রেইন দ্বারা আক্রান্তদের শরীরে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাও সামান্য কিছুটা হ্রাস পাচ্ছে। যদিও অতিমারির এক বছর পেরিয়ে বর্তমানে এটিই সবথেকে প্রচলিত স্ট্রেইন।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের লক্ষণগুলি কী কী?

অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের মতো ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের লক্ষণ বা উপসর্গগুলি প্রায় একই। যদিও এই ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তির হার বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়েছে। প্রাথমিক স্তরে রোগীদের ফুসফুসে তীব্র সমস্যা, শ্বাসকষ্ট এবং অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা দেখা গিয়েছে।

কোভিড ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে চিন্তার বিষয়গুলি কী কী?

প্রথমত এটি অনেক বেশি ছোঁয়াচে বা সংক্রামক। ফলে পরিবারের মধ্যে এক জনের থেকে দ্বিতীয় জনের কোভিড সংক্রমণের হার বৃদ্ধির নেপথ্যে এই ভ্যারিয়েন্ট অনেক বেশি দায়ী। যার ফলে হাসপাতালে ভর্তির হারও বেশি।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উৎপত্তি কোথায়?

এই ভ্যারিয়েন্ট আসলে কোথা থেকে এসেছে তা ঠাহর করা মুশকিল। তবে ২০২০-র ডিসেম্বর মাসে ভারতে এটিকে প্রথম পাওয়া যায়।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে ঠেকাতে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ?

অবশ্যই সামাজিক দুরত্ব মেনে চলতে হবে। সঠিক পদ্ধতিতে মাস্ক পরতে হবে। ভালভাবে হাত স্যানিটাইজ করতে হবে। এবং সব থেকে জরুরি হল ভ্যাকসিনেশন। কোভিড থেকে বাঁচতে ভ্যাকসিনেশন আবশ্যিক।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট থেকে কি টিকা নেওয়া ব্যক্তিদেরও নিস্তার নেই?

কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। তবে এটি সম্পূর্ণভাবে সংক্রমণ আটকাতে পারে না। যদিও টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে রোগের প্রকোপ খুবই কম ক্ষেত্রেই মারাত্মক আকার ধারণ করতে দেখা গিয়েছে।

আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা –

অন্যান্য কোভিড রোগীদের মতো মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি থেরাপিতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগী সাড়া নাও দিতে পারে।

ইন্টারনেটে এমন অনেকগুলি নিবন্ধ রয়েছে যেগুলিতে বলা হচ্ছে বাচ্চাদের এই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা আক্রান্তের প্রবণতা বেশি। এই বিষয়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কী?

গোটা বিশ্বেই শিশুরা আগামী কয়েক মাস টিকা ছাড়াই থাকবে। আর যেহেতু ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট অনেক বেশি সংক্রামক সেহেতু বাচ্চাদের আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়তে পারে। সেই কারণেই অনেক বেশি সংখ্যায় শিশুরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এমন কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি যে প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে রোগের প্রকোপ মারাত্মক হবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগীরা হালকা অথবা উপসর্গহীন হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.