জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, মাংস পেশি ও গাঁটে ব্যথা, এগুলি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ। এই উপসর্গগুলি দেখা দিলে দ্রুত করোনা পরক্ষা করাতে হবে। সেই সঙ্গে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে আলাদা করে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। নিজের সংস্পর্শে আসা প্রত্যেককেও সতর্ক করে দিতে হবে।
করোনা আক্রান্ত হলে কী করবেন…
১.শুরুতেই ‘সেলফ-আইসোলেশনে’ চলে যান। অর্থাৎ নিজেকে পরিবারের বাকি সদস্যদের কাছ থেকে পুরোপুরি আলাদা করে ফেলুন। পরিবারের সদস্যদের বা অন্যদের সংক্রমিত হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে আপনার এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি। আলাদা একটি ঘরে থাকুন। ঘরের বাইরে যাবেন না। আলাদা বাথরুম ব্যবহার করুন। খাবার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও ওষুধ ঘরের দরজার বাইরে রেখে দেবেন পরিবারের সদস্যরা।
২. প্রয়োজনীয় ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত গরম জল ও ভেপার নিতে পারেন। চিকিৎসকেরা বলছেন দিনে অন্তত চার থেকে ছয়বার গার্গল করুন। এছাড়াও দিনে বেশ কয়েকবার গরম জলের তাপ নিতে পারেন।
৩.পুষ্টিকর খাবার খান। চিকিৎসকেরা মনে করেন, এই সময় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এমন খাবার খান। সুফল মিলবে। প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে। স্যুপও খেতে পারেন। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীর দ্রুত চাঙ্গা হবে।
৪. করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে। তাঁর পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে ষুধের ডোজ বাড়ান বা কমান। তবে সবটাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে।
৫. শরীরে অক্সিজেনের মাত্রার দিকে খেয়াল রাখুন। করোনা আক্রান্ত হলে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রার ওঠানামা করে। সেদিকে খেয়াল রাখুন। পালস অক্সিমিটার সঙ্গে রাখুন। নিয়মিত শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা চেক করুন। তা নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। আঙুলের মাথায় লাগিয়ে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা মাপা যায়। সাধারণত পালস অক্সিমিটারে ৯৫ থেকে ১০০ শতাংশ অক্সিজেন মাত্রাকে স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়। অক্সিজেনের মাত্রা ৯৫ শতাংশের কম হলে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। যার ফলে শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা, বুক-ব্যথা, কিংবা হৃৎস্পন্দন বেড়ে যেতে পারে। এগুলি হলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে রোগীকে অক্সিজেন দিতে হবে। হাসপাতালে বা বাড়িতেই অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
করোনা আক্রান্ত হলে কী করবেন না….
১. করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসার পরেও দিন কয়েক সতর্ক থাকতে হবে। নিজেকে অন্যদের থেকে আলাদা করে রাখতে হবে। জনবহুল জায়গা কিছুদিন এড়িয়ে চলুন।
২. মুখ ও নাক খোলা রেখে হাঁচি, কাশি নয়। আপনার থেকে করোনাভাইরাস অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। করোনা আক্রান্ত হলে সব সময় মাস্ক ব্যবহার করুন। কাশি বা হাঁচির সময় নাক, মুখ রুমাল বা টিস্যু, কনুই দিয়ে ঢাকুন। আপনার ব্যবহার করা টিস্যুটি নির্দিষ্টি জায়গায় ফেলুন।
৫. ঘর ছেড়ে বাইরে যাবেন না। করোনা আক্রান্ত হলে একটি আলাদা ঘরে আপনাকে নির্দিষ্ট কয়েকটি দিন থাকতে হবে।
৬. ভালো করে সেদ্ধ নয়, এমন খাবার খাবেন না। এতে আপনার শরীর আরও বেশি খারাপ হতে পারে।