টানা কয়েক মাস ধরে আমেরিকায় শিশু-কিশোরদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ছিল নিম্নমুখী। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে ছবিটা বদলে গিয়েছে। বিভিন্ন প্রদেশে স্কুল খোলার ঠিক মুখে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের হার ফের বাড়ছে। এর জন্য ডেল্টা স্ট্রেনের দাপট এবং ১২ বছরের কমবয়সিদের টিকা না-পাওয়াকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
দ্য আমেরিকান অ্যকাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস (আপ) জানিয়েছে, শুধুমাত্র ৮-১৫ জুলাইয়ের মধ্যে ২৩,৫৫০টি শিশুর দেহে নতুন করে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। যা জুনের শেষার্ধের পরিসংখ্যানের প্রায় দ্বিগুণ। যদিও আপের মতে, শিশুদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার হার খুবই কম। আমেরিকায় ১২ বছরের কমবয়সিদের টিকাকরণ এখনও শুরু হয়নি। দেশের অন্যতম করোনা বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউচি সেনেট কমিটির শুনানিতে মঙ্গলবার জানান, ১২ বছরের কমবয়সিদের টিকাকরণ সংক্রান্ত তথ্য হাতে পেতে শীত পড়ে যাবে। এর পর ওই তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিষেধকে ছাড়পত্র দেবে খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফডিএ। ফলে স্কুলপড়ুয়াদের একটা বড় অংশের টিকাকরণ না হওয়ায় এ বছর স্কুল খোলা খুবই বিপদের হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ। সেন্টার ফর ডিজিজ় কন্ট্রোলের শীর্ষকর্তা রোশেল ওয়ালেনস্কি এ বিষয়ে সতর্ক করে বলেছেন, ‘‘আমেরিকায় করোনায় মৃত ৬০০ জনের মধ্যে মাত্র ৪০০ জন শিশু। ফলে ওদের বিপদ কম বলে কেউ যদি ভেবে থাকেন তা হলে ভুল ভাবছেন। এক জনও শিশুর মৃত্যু হওয়ার কথা নয়। ৪০০ তো অনেক বড় একটা সংখ্যা।’’
১২ বছরের কমবয়সিদের উপরে পরীক্ষা চালাচ্ছে মডার্না ও ফাইজ়ার। ফাইজ়ার জানিয়েছে, ৫ থেকে ১১ বছর বয়সিদের পরীক্ষার তথ্য মিলবে সেপ্টেম্বর নাগাদ। তার পরে হাতে আসবে ২ থেকে ৫ বছরের শিশুদের ফলাফল। যারা আরও ছোট, অর্থাৎ ৬ মাস থেকে ২ বছর বয়সি শিশুদের উপরে পরীক্ষা-পর্বের তথ্য মিলবে অক্টোবর বা নভেম্বর নাগাদ। সুতরাং এ বছরের মধ্যে ওদের টিকাকরণের সম্ভাবনা যে খুবই কম তা স্পষ্ট।
পাশাপাশি জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, আমেরিকায় বহু শিশু অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ টিকাগুলিও পায়নি। তাদের দ্রুত টিকাকরণ প্রয়োজন।