বৃহস্পতিবার রাজ্যে দেড় হাজারের গণ্ডি পার করেছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। শুক্রবার তা সতেরোশো ছাড়িয়ে গেল। চিকিৎসক মহলের আশঙ্কা, যে হারে রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে, তাতে শীঘ্রই তা দু’হাজার টপকাবে। রাজ্যের মধ্যে বিশেষত কলকাতা ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। মহানগরীতে দৈনিক সংক্রমণ বাড়তে বাড়তে সাতশোর কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনাতেও সাড়ে চারশোর কাছে। দৈনিক আক্রান্তের পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংক্রমণের হারও। শুক্রবার তা বেড়ে ১৪ শতাংশ ছাড়াল। দৈনিক সংক্রমণের সাম্প্রতিক এই স্ফীতি দেখে আশঙ্কিত চিকিৎসক মহল। তাদের তরফে অক্ষরে অক্ষরে কোভিডবিধি পালনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় কোনও কোভিড রোগীরই মৃত্যু হয়নি।
শুক্রবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত কোভিড বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৭৩৯ জন। এখনও পর্যন্ত কোভিডে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২০ লক্ষ ৩১ হাজার ১৬৪ জন। রাজ্যে নতুন করে যত সংক্রমিত হয়েছেন, তার মধ্যে অধিকাংশই কলকাতার অধিবাসী। মহানগরে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৭৩ জন। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে পিছিয়ে নেই উত্তর ২৪ পরগনাও। ওই জেলায় আক্রান্ত ৪৪১ জন। কলকাতা সংলগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলির কোভিড পরিস্থিতি প্রশাসনের নজরে রয়েছে। ওই তিন জেলায় দৈনিক আক্রান্ত যথাক্রমে ১৫১ জন, ৮১ জন, ৭৮ জন।
রাজ্যে এখনও পর্যন্ত কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ২১ হাজার ২১৯ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে কোভিড পরীক্ষা হয়েছে ১১ হাজার ৮১১ জনের। দৈনিক সংক্রমণের হার বেড়ে হল ১৪.৭২ শতাংশ। রাজ্যে বর্তমানে কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়ে আট হাজার ২৭৭।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৪ জুনের তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ১৬০। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ১৩৫। তার আগের দু’দিন ছিল ১২৩ এবং ১৪৮। পরের দু’দিনের সংখ্যা ছিল ১৯৪ এবং ২২৯। ১২ থেকে ১৬ জুন, এই পাঁচ দিনের গড় হল ১৬০, যা ১৪ জুনের চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৫ জুনের চলন্ত গড় হল ১৩ থেকে ১৭ জুনের আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)