কয়েক মাসের মধ্যেই ভারতীয় বাজারে পাওয়া যাবে সারভাইকাল ক্যানসার বা জরায়ুমুখ ক্যানসারের প্রথম টিকা। এই প্রতিষেধকের দাম থাকবে সাধারণের নাগালের মধ্যেই। ২০০ থেকে ৪০০ টাকার বিনিময়ে দেশের মেয়েরা জরায়ুমুখ ক্যানসারের বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারবে। কমবে রোগের ঝুঁকি।
কেন্দ্রের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ বৃহস্পতিবার একটি অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘জরায়ুমুখ ক্যানসারের টিকা তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে। এ বার জনগণের কাছে তা পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করতে হবে।’’
জিতেন্দ্র আরও বলেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতি প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে। এর ফলস্বরূপ সারভাইকাল ক্যানসারের টিকার মতো প্রতিষেধক তৈরির কাজ দ্রুততার সঙ্গে শেষ করা সম্ভব হয়েছে। বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারগুলি সব সময়ে তাঁদের প্রাপ্য সম্মান পায় না। কর্কট রোগের ক্ষেত্রে দেশের বিজ্ঞানীরা এত বড় সাফল্য পেয়েছেন আর তাঁদের এই সাফল্য উদ্যাপন করতেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।’’
করোনা টিকা তৈরি করে বিশ্ব জুড়ে কোভিড সংক্রমণ ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট। এ বার সেই আদার পুণাওয়ালার সংস্থা সিরামই বাজারে আনতে চলেছে জরায়ুমুখ ক্যানসারের টিকা। এই ক্যানসারের পিছনে রয়েছে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)। আর সেই ভাইরাসকে রুখতেই কাজে আসবে সিরামের এই নয়া টিকা।
সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার কর্ণধারও ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘জরায়ুমুখ ক্যানসারের টিকার দাম ২০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যেই ধার্য করা হবে। চূড়ান্ত দাম এখনও নির্ধারণ করা বাকি। সব ঠিক থাকলে এ বছরের শেষেই এই টিকা বাজারে আনতে পারব বলে আমরা আশাবাদী। প্রথম পর্যায় কেবল সরকারি হাসপাতালগুলি থেকেই এই টিকা নেওয়া যাবে। পরের বছর থেকে কিছু বেসরকারি মাদ্যমেও এই টিকা পাওয়া যাবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ক্যানসার অন্যান্য ক্যানসারের মতো নয়। কারা এই রোগে ভবিষ্যতে আক্রান্ত হতে পারেন, সচেতন থাকলে তা জানা যেতে পারে বহু আগে থেকেই। ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে এইচপিভি ভাইরাসের কারণেই শরীরে এই কর্কট রোগ বাসা বাঁধে। তাঁদের দাবি, এইচপিভি ভাইরাস শরীরে প্রবেশের প্রায় ১৫ থেকে ২০ বছর পর শরীরে দেখা দেয় এই ক্যানসার। ফলে সচেতন থাকলে ক্যানসার হওয়ার অনেক আগে থেকেই আটকানো যেতে পারে। টিকার মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে। তবে যৌন সংসর্গ শুরুর আগেই নারীদের এই টিকা নিয়ে নিতে হবে। ৯ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে এই টিকা নিয়ে নিতে পারলে বাড়তি বয়সে এই রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমবে।