শিশুদের জন্য করোনা ভ্য়াকসিনের ট্রায়াল শেষ করল কোভ্যাক্সিন। ভারত বায়োটেক সংস্থার তরফে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফার ট্রায়ালের ফলাফল জমা দেওয়া হল ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া বা ডিসিজিআই-এর কাছে। যদি এই ভ্যাকসিন অনুমোদন পায়, তবে এটিই দেশের প্রথম করোনা টিকা হবে, যা ২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের দেওয়া যাবে।
হায়দরাবাদের সংস্থা ভারত বায়োটেকের চেয়ারম্যান ডঃ কৃষ্ণা এল্লা শনিবার বলেন, “আমরা ২ থেকে ১৮ বছর বয়সী স্বেচ্ছাসেবকদের উপর করা কোভ্যাক্সিনের ট্রায়ালের রিপোর্ট জমা দিয়েছি। শীঘ্রই এই ভ্যাকসিনের অনুমোদন মিলবে বলে আশা করছি।”
গত মাসেই ভারত বায়োটেকের তরফে জানানো হয়েছিল, শিশুদের উপর কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফার ট্রায়াল শেষ হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই তারা ডিসিজিআইয়ের কাছে অনুমোদনের জন্য আবেদন জানাবে। গতকাল সেই আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পাশাপাশি বুস্টার ডোজ় নিয়েও চিন্তাভাবনা শুরু করা হয়েছে বলে জানায় টিকা উৎপাদক সংস্থা। বুস্টার ডোজ় নিয়ে বিস্তারিত তথ্য না জানালেও ন্যাসাল ভ্যাকসিন অর্থাৎ নাকে ওষুধ দেওয়ার মাধ্যমে টিকাকরণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
বর্তমানে দেশে ১৮ উর্ধ্বদেরই টিকাকরণ চলছে। এখনও অবধি দেশে ৯০ কোটি ভ্য়াকসিন দেওয়া হয়েছে। দেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনগণের মধ্যে ৬৯ শতাংশ ভ্য়াকসিনের প্রথম ডোজ় ও ২৫ শতাংশ দুটি ডোজ়ই পেয়ে গিয়েছে। উৎসবের মরশুমেই করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকায় অক্টোবর মাস থেকেই শিশুদের টিকাকরণ শুরু করার পরিকল্পনা ছিল। তবে এখনও অবধি শিশুদের টিকাকরণ নিয়ে কোনও ঘোষণা করেনি কেন্দ্র।
ভারতে শিশুদের টিকাকরণের দৌড়ে আপাতত কোভ্যাক্সিনের সঙ্গে রয়েছে জ়াইডাস ক্যাডিলার করোনা টিকা জ়াইকোভ-ডি-ও। তবে জ়াইকোভ-ডি কেবল ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদেরই দেওয়া যাবে। সেখানেই কোভ্যাক্সিনের টিকা অনুমোদন পেলে, তা ২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের দেওয়া যাবে।
এদিকে, চলতি মাসেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকেও অনুমোদন পাওয়ার কথা কোভ্যাক্সিনের। এই বিষয়ে সংস্থার চেয়ারম্যান ডঃ কৃষ্ণা এল্লা জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য় সংস্থার অনুমোদন পাওয়ার জন্য যে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলি জমা দেওয়ার প্রয়োজন, সেই সমস্ত শর্ত পূরণ করা হয়েছে। গত ৯ জুলাই আমরা এই তথ্য জমা দিয়েছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনের কার্যপ্রণালী শেষের জন্য প্রায় ৬ সপ্তাহ সময় লাগে। আশা করা হচ্ছে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই করোনা টিকার স্বীকৃতি পাবে কোভ্যাক্সিন, এমনটাই জানান তিনি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেয়ে গেলে কোভ্যাক্সিনের টিকাপ্রাপকদেরও বিদেশ যাত্রার ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টাইনের ঝক্কি পোহাতে হবে না। যদিও এই বিষয়ে ভারত বায়োটেক সংস্থার প্রধান এই বিষয়ে কথা বলতে নারাজ বলেই জানান।