করোনার করাল গ্রাসে পর্যুদস্তু গোটা দুনিয়া। ব্যাধিকে রুখতে বাজারে ভ্যাকসিন চলে এলেও সেভাবে মিলছ না সুরাহা। বরং দিন যত যাচ্ছে ততই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার গ্রাফচিত্র।
মারণ ব্যাধির সংক্রমণ রুখতে নানা উপায় অবলম্বন করলেও ঠেকানো যাচ্ছে না করোনা। এই অবস্থায় প্রতিদিন চারপাশে যেভাবে হু-হু করে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তাতে আপনিও করোনা পজিটিভ কি না তা মুহুর্তের বলে দেবে বিজ্ঞানীদের নয়া উদ্ভাবনী প্রযুক্তি।
জানা গিয়েছে, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে রক্তের চাপ, প্রেসার, অক্সিজেনের স্যাচুরেশন, শরীরের তাপমাত্রা এবং কোনও ব্যক্তির শরীরে করোনার জীবাণু রয়েছে কি না তা বলে দেবে নয়া এই মেশিন।
মানুষের হাতের তালুর সাইজের এই ডিভাইসটি আবিষ্কার করে গোটা দেশকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে চেন্নাইয়ের কে.জে হাসপাতালের একদল গবেষক এবং স্নাতকোত্তরের গবেষকরা।
মানুষের হাতের তালুর সাইজের এই ডিভাইসটি তাঁরা সফল ভাবে আবিষ্কার এবং প্রদর্শন করে দেখিয়েছেন। এই মেশিনটি জীবিত মানব দেহের মোট তাপমাত্রার ২৩ থেকে ২৫ মিলি ভোল্ট পরিমাপ করতে সক্ষম। তবে গবেষকদের মতে ভাইরাসের দ্বারা সংক্রামিত রোগীদের শরীরের তাপমাত্রার রিডিং দেখাবে ২০ থেকে ২২ মিলি ভোল্ট। তবে কোনও ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হলে এই মেশিনের সাহায্যে তাঁর শরীরের তাপমাত্রার রিডিং দেখাবে ৫ থেকে ১৫ মিলি ভোল্ট।
এই মেশিনের সেন্সরগুলি রক্তের অক্সিজেনের কম স্যাচুরেশন এবং শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা (জ্বর) ছাড়াও রক্তের কম কোষ (ডাব্লুবিসি), লোহিত রক্তকণিকা (আরবিসি) এবং প্লেটলেট গণনা, রক্তচাপ শনাক্ত করতে সক্ষম হবে।
এই বিষয়ে ওই গবেষক দলটি আরও জানিয়েছেন যে, এই গবেষণাটি তাঁরা ক্যান্সার রোগীদের উপর চালিয়েছিলেন। গবেষণা শেষে দেখা গিয়েছে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের শরীরে এটি ৬৮ এমভি পর্যন্ত দেখায়। যা শরীরের উচ্চ তাপমাত্রা এবং কোষগুলির দ্রুত গুণকে নির্দেশ করে।
এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, “আমরা চেন্নাইয়ের স্ট্যানলে এবং ওমান্ডুরার হাসপাতালে আসা কয়েকশো রোগীর আরটি-পিসিআর পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে আমাদের ডিভাইসের ফলাফলগুলি যাচাই করেছি। আরটি-পিসিআর ফলাফলের সঙ্গে এটির একশো শতাংশ মিল ছিল এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্লাড কাউন্ট টেস্টের তুলনায় প্রায় ৯৮ শতাংশ মিল ছিল। ”
তবে নয়া এই ডিভাইসটি তৈরি করতে প্রায় ১৫ মাস সময় লাগলেও এর ব্যয় তুলনামূলক ভাবে অনেক কম। এই বিষয়ে কে.জে হাসপাতালের গবেষকরা জানিয়েছেন একটি ডিভাইস তৈরি করতে মাত্র ১০,০০০ টাকা খরচ হয়েছে। ফলে এই মেশিন উৎপাদনকারী সংস্থাগুলি অনেক কম খরচে এই ডিভাইস তৈরি করতে পারবেন এবং তা বাজারজাত করতে পারবেন।