করোনায় দিশেহারা দেশ, হাসপাতালের জানলা ভেঙে পালাল ৩১ আক্রান্ত

দেশজুড়ে করোনাতঙ্ক। তার মধ্যে এবার সকলের নজর এড়িয়ে কোভিড হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেলেন মোট ৩১ জন করোনা আক্রান্ত রোগী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে, ত্রিপুরার আগরতলার অরুন্ধতীনগরের পিআরটিআই কোভিড কেয়ার সেন্টারে।

বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের নজর এড়িয়ে ওই কোভিড কেয়ার সেন্টারের জানলা ভেঙে ৩১ জন রোগী পালিয়ে যান বলে জানিয়েছেন পশ্চিম ত্রিপুরার অরুন্ধতীনগরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শৈলেষ কুমার যাদব৷

এই বিষয়ে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে সাক্ষাৎকারে ত্রিপুরা সদরের সাবডিভিশনাল পুলিশ অফিসার অর্নিবান দাস জানিয়েছেন যে, ভিনরাজ্য থেকে বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে আগত যাত্রীদের নিয়মমাফিক করোনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে প্রায় ৫০ জন যাত্রীর রিপোর্ট করোনা পজিটিভ আসে। এরপরই সংক্রমণ রুখতে তাঁদের ওই পিআরটিআই কোভিড কেয়ারে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হয়।

জানা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে মোট ৩১ জন ওই করোনা হাসপাতালের জানলা ভেঙে পুলিশের নজর এড়িয়ে পাইপ বেয়ে নীচে নেমে আসেন এবং সেখান থেকে পালিয়ে যান। এর আগেও বেশ কয়েকজন রোগী পালানোর চেষ্টা করায় আগেভাগেই হাসপাতালের গেটে পুলিশি পাহারাও বসানো ছিল। তবে এবার সবার অলক্ষ্যে কীভাবে একসঙ্গে এত লোক পালালো তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। কোভিড সেন্টারে নিরাপত্তার গাফিলতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকগণ।

হাসপাতালের সদর গেটের বদলে পিছনের জানলা ভেঙে পাইপ বেয়ে নীচে নেমে পালিয়ে যান ওই ৩১ জন করোনা রোগী। পরে হাসপাতাকের অনেক বেড খালি থাকায় বিষয়টি নজরে আসে। শুরু হয় ব্যাপক তল্লাশি। যদিও এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ করোনা আক্রান্তদের খোঁজ মেলেনি।

এদিকে ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে রাজ্যজুড়ে। রেলওয়ে স্টেশন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। রাজ্যজুড়েও একাধিক পুলিশ বাহিনী পলাতক করোনা রোগীদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে।

অন্যদিকে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আজ রাত থেকেই রাজধানী আগরতলায় জারি হচ্ছে নৈশ কার্ফু। পাশাপাশি আগামী ২৪ তারিখ থেকে ভিন রাজ্য থেকে আগত যাত্রীদের বাধ্যতামূলকভাবে করোনার নেগেটিভ রিপোর্ট দেখানোর নিয়মও জারি করেছে ত্রিপুরা সরকার।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার শিলচর বিমানবন্দরে ৪০০ জন যাত্রীর মধ্যে ৩৮৫ জন যাত্রী করোনা টেস্ট না করিয়ে পালিয়ে যান। তাঁদের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি। সরকারি আইন অমান্য করায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।

সূত্রের খবর, ভিনরাজ্য থেকে আগত যাত্রীদের জন্য বিমানবন্দরে করোনা টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এরজন্য যাত্রীদের বিমানবন্দরের কাছেই অবস্থিত স্থানীয় মহাত্মা গান্ধী মডেল হাসপাতালে সোয়াব পরীক্ষা করার কথা ছিল। তবে, পরীক্ষাগুলির জন্য ৫০০ টাকা ধার্য করায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। টেস্ট না করিয়েই সেখান থেকে তাঁরা বেপাত্তা হয়ে যান বলে অভিযোগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.