রবিবার সকালে নিছক একটা মৃত্যু নয়, একটা অধ্যায়ের শেষ পাতাটা লেখা হল। ‘অপু’ ছবির জন্য জহুরির চোখ চিনেছিল রত্ন। বিভূতিভূষণের বিখ্যাত চরিত্রের জন্য এক আনকোরা অভিনেতাকে বেছে নিয়েছিলেন ‘রে।’
সেই শুরু। তারপর ইন্ডাস্ট্রিতে যেন এক মহীরূহের মত ছিল তাঁর উপস্থিতি। ২৫০ ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। অসুখ করেছে, বয়স বেড়েছে। থামেনি অভিনয়। উদাত্ত কন্ঠে আজও কানে বাজছে বিখ্যাত সব সংলাপ। তবে জাতীয় পুরস্কারের ক্ষেত্রে একসময় অভিমানী হয়েছিলেন তিনি।
গৌতম ঘোষের ‘দেখা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য জাতীয় পুরস্কারে মনোনীত হয়েছিলেন সৌমিত্র। চলচ্চিত্রে দেশের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মান ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বিনা দ্বিধায়। যদিও ‘অন্তর্ধান’ ছবির জন্য প্রথম জাতীয় পুরস্কার পান তিনি।
‘দেখা’ ছবির জন্য স্পেশাল জুরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই পুরস্কারকে ‘শান্তনা পুরস্কার’ আখ্যা দিয়ে ফিরিয়ে দেন সদর্পে। জাতীয় পুরস্কারের ক্ষেত্রে বিচারকদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। প্রতিবাদে জাতীয় পুরস্কার গ্রহণ করেননি ছবির পরিচালক গৌতম ঘোষও।
পরবর্তীকালে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তাঁর মনে হয়েছিল বিচারকদের পক্ষপাতিত্ব আছে। জাতীয় পুরস্কারের ক্ষেত্রে লবি থাকারও উল্লেখ করেছিলেন তিনি। একসময় অপর্ণা সেনের ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয়ের পরও পুরস্কার পাননি জেনিফার কাপুর। অথচ পুরস্কার পেয়ে যান রেখা। সেকথাও উল্লেখ করেছিলেন সৌমিত্র।
পরে অবশ্য সুমন ঘোষের ‘পদক্ষেপ’ ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কার পান সৌমিত্র। অভিমান থাকলেও ভক্তদের মুখের দিকে তাকিয়ে সেই পুরস্কার গ্রহণ করেছিলেন তিনি। সৌমিত্রের কথায় সেই ছবিতে সর্ব সেরা না হলেও অন্যতম সেরা অভিনয় করেছিলেন তিনি। তবে সর্বসেরা বলতে মানিকদার ছবিকেই বেছে নিতেন সৌমিত্র। ‘দেবী’, ‘চারুলতা’র সঙ্গে তুলনা করতে পারতেন না অন্য কোনও কাজ।
দক্ষিণের ফিল্মফেয়ারে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট পেয়েচিলেন সৌমিত্র। পেয়েছিলেন দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার। পেয়েছিলেন পদ্মভূষণ সম্মান। ফ্রান্স থেকেও বিশেষ সম্মান পেয়েছিলেন তিনি।