তিনিই সুন্দরবনের (Sunderban) রাজা – দক্ষিণরায়। কিন্তু রাজার দর্শন পাওয়া তো মুশকিল। দীর্ঘ অপেক্ষার পর যদি বা তার দেখা মেলে, তবু ক্ষণিকের জন্য। ভাল করে তার হলুদ-কালো ডোরাকাটা শরীর দেখতে না দেখতেই জঙ্গলের বাঁকে অদৃশ্য! তাই দেখার সাধ পূরণ হয়েও যেন হয় না পর্যটকদের।
সুন্দরবনের পর্যটক সমাগমের মূল আকর্ষণ তো রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার (Royal Bengal Tiger)। নতুন বছরের দ্বিতীয় রবিবার অবশ্য সেই বাংলার বাঘ পর্যটকদের আশা পূরণ করল। সুন্দরবনের দোবাঁকিতে পর্যটকদের ক্যামেরাবন্দি হল একসঙ্গে তিন-তিনটি বাঘ, যা কি না বিরল। নিজেদের ডেরা থেকে বেরিয়ে নদী সাঁতরে তারা চলে গেল অপর পাড়ে।
রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের টানেই সুন্দরবন ভ্রমণে যান বাইরের বহু পর্যটক। তবে গত কয়েক বছর ধরে তাদের সাক্ষাৎ পাওয়া যেন স্বয়ং ভগবানের দর্শন পাওয়ার মতো ঘটনায় পরিণত হয়েছিল। লকডাউনে যদিও ফের পরিস্থিতির বদল ঘটেছে। জনসমাগম প্রায় শূন্য হয়ে যাওয়ায় নিজেদের বিচরণ ক্ষেত্রে ফের স্বমেজাজে ঘুরে বেড়াচ্ছে দক্ষিণরায়ের দল। শীতের মরশুমে মাঝেমধ্যেই পর্যটকদের উপস্থিতি কিছুটা উপেক্ষা করেই জঙ্গলের বাইরে নদীর ধারে ঘোরাফেরা করছিল তারা। তবে একাই দেখা যাচ্ছিল বেশি, খুব দলবদ্ধভাবে রয়্যাল বেঙ্গলকে আগে খুব একটা দেখা যায়নি।
রবিবার সকালে অবশ্য চেনা সেই দৃশ্যে বদল এল। সুন্দরবনের দোবাঁকিতে নদীর ধারে দেখা গেল একসঙ্গে তিন-তিনটি বাংলার বাঘ! হঠাৎই নদীর ধারে ভ্রমণের সময় পর্যটকদের চোখে পড়ে, একসঙ্গে তিনটি বাঘ নদী পারাপার করছে। সঙ্গে সঙ্গে এই দৃশ্য তাঁরা ক্যামেরাবন্দি করেন। তবে তিনজন নদী সাঁতরে ওপারে গিয়ে ফের জঙ্গলে উধাও হয়ে যায়। কিন্তু ততক্ষণ পর্যন্ত তো সবটাই পর্যটকদের চোখের সামনে দৃশ্যমান। সুন্দরবনে রয়্যাল বেঙ্গলের এই সংঘবদ্ধ দৃশ্য যে বিরল, তা মানছেন স্থানীয়রাই। একসঙ্গে তিনটি বাঘ দেখার খুশিতে তাই পর্যটকদের পাশাপাশি উচ্ছ্বসিত তাঁরাও।