আদালত অবমাননার মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। তবে কলকাতা হাইকোর্টে তিরস্কারের মুখে পড়ত হল তাঁকে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘আপনি পর্ষদের শীর্ষ পদে আছেন। আপনার ইগো থাকতে পারে না।
বিচারপতির নির্দেশ মতো সোমবার সশরীরে হাইকোর্টে আসেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতিকে অপমান করার কোনও উদ্দেশ্য নেই হাইকোর্টের। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করায় তাঁকে ডাকা হয়েছে। হাইকোর্টের তরফে বলা হয়, ‘আপনি আইন কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। তারপরও আইনকে অবহেলা করছেন?’ সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির উদ্দেশে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, ‘আপনি পর্ষদের শীর্ষ পদে আছেন। আপনার ইগো থাকতে পারে না।’ নাগরিকদের সঙ্গে কখনও ইগোর লড়াই হতে পারে না।
২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটে ভুল প্রশ্নপত্র নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন কয়েকজন প্রার্থী। সেই মামলায় হাইকোর্ট দিয়েছিল, কোনও পরীক্ষার্থী যদি সেই প্রশ্নগুলির উত্তর দিয়ে থাকেন, তাহলে তাঁদের নম্বর দিতে হবে। যদিও ওই পড়ুয়াদের এখনও নম্বর দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তা নিয়ে চলতি মাসে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে হাইকোর্ট জানতে চায়, কেন নির্দেশ সত্ত্বেও নম্বর দেওয়া হয়নি? পুরো বিষয়টিকে প্রার্থীদের হেনস্থা হিসেবে দেখা হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতিকে জরিমানা করে হাইকোর্ট। পরে তাঁকে সশরীরে আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
নির্দেশ মতো সোমবার হাইকোর্টে হাজিরা দিয়ে পর্ষদ সভাপতি জানান, গত সপ্তাহেই মামলাকারীকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে যোগ্য প্রার্থীদের চাকরির ব্যবস্থা করার জন্য পর্ষদ সভাপতিকে নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি মন্তব্য করেন, বর্তমানে সেই সুযোগ না হলেও ভবিষ্যতে যখন শূন্যপদ তৈরি হবে, তখন পর্ষদ সভাপতিকে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। পরে আদালতের বাইরে পর্ষদ সভাপতি জানান, হাইকোর্টে বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে। তিনি আদালত অবমাননার দায় থেকে মুক্ত হয়েছেন।