অবশেষে মিলল রাজ্য সরকারের অনুমোদন। এক বছর ধরে ঘরবন্দি স্কুল (School) পড়ুয়াদের পড়াশোনায় মনোযোগী করে তুলে শিক্ষক সংগঠনগুলির প্রস্তাবিত পথেই হাঁটল পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্য শিক্ষা কমিশন ‘বাংলা শিক্ষার পোর্টাল’-এ প্রথম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত প্রতিটি শ্রেণির জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের ‘মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ (Model Activity Task) প্রকাশ করা হল। সেগুলি জুন মাসের মিড-ডে মিল বিতরণের সময় অভিভাবকদের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। এই মর্মে স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অতিমারীর কারণে দীর্ঘ এক বছরের উপর স্কুল বন্ধ। রাজ্যের বহু ছাত্রছাত্রী নিয়মিত পঠনপাঠনের সুযোগ পাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে মডেল টাস্ক পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত পড়াশোনায় তাদের আগ্রহ ফেরাবে বলে মনে করছেন শিক্ষক এবং অভিভাবকরা। টাস্ক সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রকাশের কয়েকটি শিক্ষক সংগঠন ইতিমধ্যেই বলেছে, এই দাবি তারা দীর্ঘ কয়েকমাস ধরেই জানিয়ে আসছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ শিক্ষাবর্ষের পঠনপাঠন শুরু করার জন্য মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক-এর প্রথম ও দ্বিতীয় পার্ট বাংলার শিক্ষা পোর্টাল থেকে স্কুলের কম্পোজিট গ্ৰ্যান্ট থেকে প্রিন্ট করে অভিভাবকদের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের বিতরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই টাস্ক পেয়ে অনেকটাই বইমুখী হবে। ডিআইদের মাধ্যমে স্কুলগুলিকে হোয়াটসঅ্যাপ মাধ্যমে এই নোটিস দেওয়া হয়েছে। এই টাস্ক অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত দেওয়ায় কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের মিড ডে মিল না থাকায় তাদের কীভাবে দেওয়া হবে এই মডেল টাস্ক, তার সুস্পষ্ট নির্দেশ নেই। তবুও বেশিরভাগ ডিআই স্কুলগুলিকে একইসঙ্গে তা দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্যের সরকারি স্কুলের শিক্ষকমহল সূত্রে এই বিষয়গুলি জানা গিয়েছে।
এই বিষয়ে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হাণ্ডা জানিয়েছেন, বর্তমানে শিক্ষাবর্ষের ছ’মাস চলছে। গত মার্চ মাস থেকে সমিতির পক্ষ থেকে দফতরের কাছে টাস্ক প্রদানের দাবি বারেবারে করা হয়েছে। দীর্ঘ ৫ মাস পর সরকারের এহেন উদ্যোগ দেরিতে হলেও বোধোদয়। একই সঙ্গে সমিতির অভিযোগ, এতদিন পরে প্রকাশিত হলেও ‘মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ অত্যন্ত নিম্নমানের। বিষয় পিছু মাত্র ৫/৬টি প্রশ্ন দিয়ে কোনওরকমে দায়সারা হয়েছে। অল পোস্ট গ্ৰ্যজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক চন্দন গড়াইয়ের বক্তব্য, জুন মাসের মিড ডে মিলের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের অ্যাক্টিভিটি টাস্ক বিতরণ দেওয়ার দাবি আমরা দীর্ঘদিন ধরে করে আসছি। স্কুল শিক্ষা দপ্তরকে (School Education Department) সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। টাস্ক দেওয়ার সঙ্গে সংশোধিত সিলেবাস প্রকাশ করে অনলাইন ক্লাস ও টেলি এডুকেশন শুরু করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করুক শিক্ষা দপ্তর।