পড়ুয়াদের সার্বিক উন্নয়নের কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০’ (NEP 2020)। এই শিক্ষানীতির তিন বছর পূর্তিতে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে আইআইটি খড়্গপুরের তরফে একথা জানানো হল।
সোমবার অনুষ্ঠিত এই সাংবাদিক বৈঠক থেকে প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা ড: ভি কে তেওয়ারি জাতীয় শিক্ষানীতির উল্লেখযোগ্য দিকগুলি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এই শিক্ষানীতি পড়ুয়াদের সামনে শিক্ষার এক মুক্তাঙ্গন প্রসারিত করবে। যেখানে একজন পড়ুয়া বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করলেও, যে কোনো সময় কলা বিভাগের কোনো একটি বিষয় নিয়েও পড়াশোনা করতে পারবেন। ঠিক একই কথা প্রযোজ্য কলা বিভাগের কোনো পড়ুয়ার ক্ষেত্রেও। একইসঙ্গে যে কোনো পড়ুয়া যে কোনো সময় তাঁর পড়াশোনা থামিয়ে, অন্য বিষয় বা কোর্স নিয়ে পড়াশোনা করতে পারেন। তাতে একদিকে যেমন ডিগ্রি লাভও হবে, ঠিক তেমনই নিজের পছন্দমত বিষয় নিয়ে পড়াশোনাও সম্পন্ন করতে পারবেন ওই শিক্ষার্থী। সর্বোপরি, এই জাতীয় শিক্ষানীতির সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল পুঁথিগত বা প্রথাগত পড়াশোনা ছাড়াও জোর দেওয়া হয়েছে বৃত্তিমূলক এবং পেশাদার কোর্সগুলির ওপর।”
মিঃ তিওয়ারি জানান, ইতিমধ্যে আইআইটি খড়্গপুরের বি.সি রায় মেডিকেল কলেজে ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০’ অনুসরণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে, আইআইটি খড়্গপুরে চার বছরের বি.এস (B.S) প্রোগ্রামও চলছে। একসঙ্গে, দু’টি বিষয়ের উপর বি.টেক এবং এম.টেক ডিগ্রি নিয়েও পর্যালোচনা চলছে বলে জানান অধ্যাপক তেওয়ারি। অন্যান্য অনেক প্রতিষ্ঠানেও এই শিক্ষানীতি অনুসৃত হচ্ছে বলে জানান তিনি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতিটি ক্ষেত্রে কিভাবে এই জাতীয় শিক্ষানীতিকে কাজে লাগিয়ে, পাঠক্রমগুলির প্রয়োজনীয় সংশোধন করে দ্রুত তা প্রয়োগ করা যায় সে নিয়েই এখন পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ চলছে বলে তিনি জানান।
এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই রাজ্যের সমস্ত কলেজে জাতীয় শিক্ষানীতির অনুসরণেই চার বছরের স্নাতক কোর্স (UG) এর ভিত্তিতে পাঠদান প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আইআইটি খড়্গপুরের অধিকর্তা দাবি করেন, প্রাক স্কুল স্তর (৩ বছর বয়স থেকেই) থেকে মাধ্যমিক স্তরেও (দশম শ্রেণি) অবিলম্বে এই জাতীয় শিক্ষানীতির প্রচলন করা উচিত শিক্ষার্থীদের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে। এই শিক্ষানীতির ফলে, স্কুলছুটদের সংখ্যা সম্পূর্ণভাবে কমে যাবে বলে আশাবাদী তিনি। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে আইআইটি খড়্গপুরের অধিকর্তা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার অমিত জৈন সহ অন্যান্য অধ্যাপক ও আধিকারিকরা।