অন্য সব পরীক্ষার্থীরা যখন ডুবে পড়াশোনায়, তখন এ বারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শেখ সাহিলের শয়নে-স্বপনে-জাগরণে শুধুই ছিল ফুটবল। আর চোখে ছিল মোহনবাগানকে আই লিগ জেতানোর স্বপ্ন। দিনরাত তিনি সেই স্বপ্নের পিছনে ছুটেছেন। পরিশ্রম করেছেন। ততটা মনোযোগ দেওয়া হয়নি পড়াশোনায়। সাহিলের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। কিন্তু উচ্চমাধ্যমিক? সেটা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন অভিভাবকরা। কিন্তু সেসব চিন্তা দূর করে উচ্চমাধ্যমিকেও ঝকঝকে পারফরম্যান্স দিলেন মোহনবাগানের (Mohun Bagan) নতুন মিডফিল্ড জেনারেল।
আসলে পরীক্ষার মধ্যেও বহু ম্যাচ খেলতে হয়েছে সাহিলকে (SK Sahil)। তাই পড়াশোনায় খুব একটা ফোকাস করতে পারেননি। নিয়মিত প্র্যাকটিস। ম্যাচের জন্য ভিন রাজ্যে যাওয়া। সবই করতে হয়েছে তাঁকে। একটা সময় তাঁর উচ্চমাধ্যমিক দেওয়া নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সাহিল কোনওটা বাদ দেননি। আই লিগের সব ক’টা ম্যাচ খেলেই উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছেন তিনি।
এ বছর মোহনবাগানের আই লিগ (I League) জয়ের পিছনে তাঁর অবদান ছিল বিশাল। মাঝমাঠে অনবদ্য প্রেসিং আর বুদ্ধিদীপ্ত পাসিং, তাঁকে এনে দিয়েছে চ্যাম্পিয়নের খেতাব। কিন্তু তিনি যে মাঠের বাইরেও চ্যাম্পিয়ন তা বোঝা গেল তাঁর উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলে। এত কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও ৫৭ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ সাহিল। দলের খেলোয়াড়ের এই সাফল্যে খুশি মোহনবাগান কর্তারাও।
এখানে আরও একটা কথা বলার দরকার। সাহিল কিন্তু খেলাধুলো আর পড়াশোনার মাঝে সমাজসেবাও করেন। এই লকডাউনে নিজের গ্রাম ডাঙাদিঘিলায় গরিব মানুষদের সাহায্য নেমে পড়েছিলেন তিনি। বেশ কিছুদিন ধরে গরিব মানুষের মধ্যে চাল-ডাল-আলু-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বিলি করেছেন। বারাকপুর, টিটাগড়, খড়দহ, এই সব জায়গার স্টেশন চত্বরে মানুষরা না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন, তাদের পাশেও দাঁড়িয়েছেন মোহনবাগানের এই তারকা। আসলে সাহিল শুধু পড়াশোনা বা খেলার মাঠে সীমাবদ্ধ নন। তিনি সত্যিকারের চ্যাম্পিয়ন।