মঙ্গলবার থেকে শুরু হল মাধ্যমিক পরীক্ষা। ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনের এটিই সব থেকে বড় পরীক্ষা। ফলে পরীক্ষায় সময় টোকাটুকি, নকল এবং প্রশ্নফাঁস রুখতে এবছর একগুচ্ছ নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তেমনই পরীক্ষার নির্ধারিত সময়ের আগে ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে নির্দিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে যেতে পারে সেই দিকটিতেও কড়া নজরদাড়ি রাখছে প্রশাসন।
জানা গিয়েছে, শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়গুলিতে যেমন বাড়তি পুলিশ মোতায়েন থাকছে, তেমনই দ্রুত কাউকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার জন্য থাকছে আলাদা গাড়ির ব্যবস্থা। শুধু পুলিশকর্মীরাই নন, উচ্চপদস্থ কর্তারাও মঙ্গলবার সকাল থেকে রাস্তায় থাকবেন। পাশাপাশি এদিন সকাল থেকেই শহরের যান চলাচল ব্যবস্থা যাতে মৃসন থাকে সেই বিষয়ে আগেই কড়া নজরদাড়ির কথা ঘোষণা করেছেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধায় মঙ্গলবার থেকে পরীক্ষার দিনগুলিতে নামানো হচ্ছে অতিরিক্ত বাস। থাকবে সরকারি- বেসরকারি উভয় বাসই।
এছাড়াও কমিশনারেট এলাকার গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বাড়ানো হয়েছে পুলিশ কর্মীর সংখ্যা। বিটি রোড ও কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে যেমন নির্দিষ্ট জায়গায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে, তেমনই থাকবে পুলিশি টহলদারি ভ্যানও। পরীক্ষার দিনগুলিতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত খড়দহ স্টেশন রোডের মতো যে সব রাস্তায় অতিরিক্ত গাড়ির চাপ থাকে, সেখানে বড় গাড়ি ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। এছাড়াও টালা ব্রিজের কারণে কোনও পরীক্ষার্থীকে সমস্যায় পড়তে হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর এই জেলা থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসবে ৯০,৩১৯ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা রয়েছে ৪২,৬৭৬ জন। এবং ছাত্রী ৫০,৬৪৩ জন। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবার ৬ হাজার কমেছে বলে জানানো হয়েছে। এই বছর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৪,১৪৩ জন। ছাত্রের সংখ্যা ৩৬ হাজারের কিছু বেশি। ছাত্রীর সংখ্যা ৪৭ হাজার ছাড়িয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২ হাজার কম।
এদিকে উত্তর ২৪ পরগনার গুরুত্বপূর্ণ মহকুমা শহর বারাকপুর। ফলে এখানে কোনও পরীক্ষার্থীর পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে যাতে অসুবিধা না হয় সে জন্য সবসময় সচেষ্ট রয়েছে পুলিশ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার শুধু বারাকপুর মহাকুমায় ১১১টি স্কুলকে পরীক্ষাকেন্দ্র করা হয়েছে। যেখানে প্রায় ৩২ হাজার ৮০০ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসবে। পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে, প্রতিটি কেন্দ্রে পানীয় জলের গাড়ির যেমন ব্যবস্থা থাকছে তেমনই, যেখানে শৌচালয়ের উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই সেখানে মোবাইল টয়লেটের ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে। প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে স্বাস্থ্য দফতর থেকে একজন করে রাখা হচ্ছে৷ যদি হঠাৎ কোনও পরীক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাহলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা এবং প্রয়োজনে হাসপাতালে পাঠানোর সবরকম ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বারাকপুর শিক্ষা জেলার ডিআই দীপঙ্কর রায় বলেন, ”ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা দিতে যাতে কোনও রকম অসুবিধা না হয়, সে জন্য যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার সবই নেওয়া হয়েছে।” সব মিলিয়ে কড়া প্রহরায় মাধ্যমিক পরীক্ষা সফল করতে তটস্থ প্রশাসন।