নোবেল সাহিত্য পুরস্কার পেলেন আত্মজৈবনিক লিখনে শিকড়ের সন্ধানী ফরাসি সাহিত্যিক আর্নোউ

২০২২-এর নোবেল সাহিত্য পুরস্কার পেলেন ফরাসি সাহিত্যিক অ্যনি আর্নোউ। সুইডিশ অ্যাকাডেমির তরফে জানানো হয়েছে তাঁকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে তাঁর সাহস এবং অন্যন্য ধৈর্যের সঙ্গে শিকড়ের সন্ধান, ব্যক্তিগত স্মৃতির সঙ্গে তাঁর মিলন-বিরহের সম্পর্ককে লিখনে তুলে আনার জন্য।

আর্নোউয়ের জন্ম ১৯৪০ সালে ফ্রান্সের নর্মান্ডিতে এক শ্রমজীবী পরিবারে। রুয়েঁ এবং বোর্দো বিশ্ববিদ্যালয়ে সাহিত্য নিয়ে পাঠগ্রহণের পরে তিনি সাহিত্য জগতে প্রবেশ করেন। তাঁর লিখন মূলত আত্মজৈবনিক বা স্মৃতিকথন। প্রথম জীবনে কিছু আখ্যানধর্মী লেখা লিখলেও পরে তিনি সরে আসেন স্মৃতিকথায়। এক নারীর বড় হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাওয়া পৃথিবী এবং পরিপার্শ্ব তাঁর লেখায় বার বার ছায় ফেলে। ব্যক্তিগত সময়ের সঙ্গে বাঁধা পড়ে নৈরব্যক্তিক সমাজ বা বৃহত্তর প্রিসরের মানুষের কাহিনিও। কখনও তাঁর লেখায় উঠে আসে তাঁর নিজের গর্ভপাতের প্রসঙ্গ, আসে মাতৃবিয়োগ, অ্যালঝাইমার্স বা ক্যানসারের কথাও।তাঁর বই ‘আ উওম্যান’স স্টোরি, আ ম্যান’স প্লেস’, ‘সিম্পল প্লেস’ বা ‘আই রিমেন ইন ডার্কনেস’ ইতিমধ্যেই পাঠকের নজর কেড়েছে, আদায় করেছে আলোচকদের শ্রদ্ধা। ‘প্যাসন সিম্পল’ গ্রন্থে এক পূর্ব ইউরোপীয় পুরুষের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক বহুমাত্রিক বর্ণালির ভালবাসাকে উপস্থাপন করে।

২০০৮ সালে প্রকাশিত তাঁর স্মৃতকথা ‘দ্য ইয়ার্স’-কেই আলোচকরা তাঁর সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে চিহ্নিত করেন।

আর্নোউ ইতিপূর্বে পেয়েছেন প্রি দি লা লাঙ্গে ফ্রাঁসে-র মতো সম্মান। আন্তর্জাতিক লেখক হিসেবে যুক্ত হয়েছেন রয়্যাল সোসাইটি অফ লিটারেচারের সঙ্গে। তাঁর নোবেলপ্রাপ্তি এক নারীর ব্যক্তিগত যাপনের, আনন্দ-বেদনা-নির্লিপ্তির স্বীকৃতি। সেই সঙ্গে এ-ও বলা যায় যে, এক নির্জন নারীসত্তার বিশ্বজনীন হয়ে ওঠার এক বিশেষ ঘটনা হয়ে রইল এই পুরস্কার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.