শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি! নাম না করে তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে পোস্টার শহরে। তুমুল হৈচৈ বালুরঘাট শহরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে। মঙ্গলবার সকালে এই ঘটনাকে ঘিরে রীতিমতো চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয় শহরের খাদিমপুর এলাকায়।
ঘটনা নিয়ে ওই এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলরকে টিপ্পনি করতে পিছপা হয়নি বিজেপি। তাদের কথায় ভুয়ো শিক্ষক স্কুলেই বা কি শেখাতেন? আর মানুষের পাশেই বা কিভাবে দাঁড়াবেন? ঘটনা নিয়ে জোড়ালো আক্রমণ বিজেপির রাজ্য সভাপতিরও। তাঁর কথায়, আগে তালিকা বের হতো কতজন শিক্ষক পাশ করেছেন। আর এখন রেজাল্ট বের হচ্ছে কতজন শিক্ষক ঘুষ দিয়েছেন। এর নামই এগিয়ে বাংলা বলেও উল্লেখ করেছেন রাজ্য সভাপতি। যদিও এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের দাবি, আইন আইনের পথেই চলবে।
রাজ্য জুড়ে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি সামনে এসেছে, তার তালিকা থেকে বাদ পড়েনি সংস্কৃতির শহর হিসাবে পরিচিত বালুরঘাট শহর। যে শহরের একাধিক শিক্ষক পরীক্ষায় পাশ না করেই শুধুমাত্র ঘুষ দিয়েই নাম তুলেছেন। ইতিমধ্যে যাদের ওএমআর শিট ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা নিয়ে শহর জুড়ে জোর চর্চাও শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে। আর এরই মাঝে মঙ্গলবার সকালে নাম না করে এক তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়েছে শহরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে। যেখানে লেখা রয়েছে, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভুয়ো কাউন্সিলরই কি ভুয়ো শিক্ষিকা? ছিঃ চাকরি চোররা ছিঃ। গোটা ওয়ার্ড জুড়ে এধরণের পোস্টারকে ঘিরে রীতিমতো হৈ চৈ পরিস্থিতি তৈরি হয় এদিন। যে ঘটনা নিয়ে সুর চড়ায় এলাকার বিজেপির মহিলা নেত্রী। তিনি বলেন, যেমনভাবে ভুয়ো শিক্ষকতা করছেন, তেমনিভাবে ছাপ্পা ভোটেও জিতেছেন তিনি। ঘটনা নিয়ে ওই ভুয়ো শিক্ষিকার দৃষান্তমূলক শাস্তিরও দাবি তুলেছে বিজেপি। শুধু তাই নয়, এই ঘটনা নিয়ে লাগাতার আন্দোলনেও নামছে বিজেপি এমনটাও জানিয়েছে নেতৃত্বরা।
এদিকে এই ঘটনার সত্যতা জানতে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের বাড়িতে গিয়ে হাঁকডাক করেও কোনো সাড়া মেলেনি। যদিও তার এক আত্মীয় জানিয়েছেন, অসুস্থতার কারণে তারা বাড়ির বাইরে রয়েছেন।
বিষয়টি জানবার জন্য শহরের প্রাচ্য ভারতী স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামাচরণ প্রামানিককে জিজ্ঞাসা করলে সেভাবে তিনি কিছু বলতে চাননি। তবে শনিবারও যে ওই শিক্ষিকা স্কুলে গিয়েছিলেন তা তিনি নিশ্চিত করেছেন।
২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি নেত্রী ষষ্ঠী বসাক ভট্টাচার্য বলেন, এদিন সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়েই এইসব পোস্টার দেখেছেন। এলাকার কাউন্সিলরের নামে ভুয়ো শিক্ষিকার পোস্টার! তারা ভাবতেও পারেন না। এরা যেমন ঘুষ দিয়ে চাকরি নিয়েছে, তেমনি ছাপ্পা দিয়ে ভোটে জিতেছে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বিজেপির শহর মন্ডল সভাপতি সমীর প্রসাদ দত্ত বলেন, ঘটনা নিয়ে তারা লাগাতার আন্দোলনে নামছেন।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের ওএমআর শিট এখন মোবাইলে ঘুরছে সকলের। পাশ নম্বরের থেকে অনেক কম নম্বর পেয়েছেন তিনি। এটাই এগিয়ে বাংলা। আগে পাশ করা শিক্ষকদের তালিকা বের হতো, আর এখন ঘুষ দেওয়াদের তালিকা বের হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল নেতা সুভাষ চাকি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে বলেই সেটা সত্য এমন ভাবার বিষয় নেই। আইন আইনের পথেই চলবে। সেখানে কাউন্সিলর, মন্ত্রী, নেতা কেউই রেহাই পাবে না।