আমাদের একটা সাদা দাড়িওয়ালা বুড়ো আছে, যে বলে…আমি দেশটাকে কখনো ঝুঁকতে দেব না।

করোনার প্রকোপ থেকে বেঁচে উঠেছে সারা পৃথিবী। ২ বছর পর এবছর সাড়ম্বরে উদযাপিত হল দুর্গাপুজো, কালীপুজো। কিন্তু আজও মনে পড়ে যায় ২০২০ এর মহামারির বিভীষিকা।
পৃথিবী ব্যাপী বড় বড় দেশগুলো ভারতের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে, তির্যক মন্তব্য করছে। চিন বলল, করোনার জেরে ভারতের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে, মানুষ হয় করোনায় মরবে, নয়ত না খেয়ে মরবে। রাশিয়া বলল, ভারতকে আমরা সাহায্য করব, জাতিটা তীব্র সংকটের সম্মুখীন, আমাদের সহযোগিতা না পেলে শেষ হয়ে যাবে। আমেরিকা বলল, ভারতকে আমাদের শরণাপন্ন হতে হবে। ওদের আমরা উচ্চ দরে টিকা, ওষুধ বিক্রি করে দেশের অর্থনীতি অনেকটা চাঙ্গা করতে পারব। সবাই ভেবেই নিয়েছিল ভারত এবার শেষ! ১৩৫ কোটির দেশ, নিজেদের সামলাতে পারবে না।

তখন অভয় বার্তা দিল এক সাদা দাড়িওয়ালা বুড়ো, আমি তো আছি। আপনি তাঁকে পছন্দ করতে পারেন, নাও করতে পারেন কিন্তু লোকটা ছিল বলেই আজ ১৩৫ কোটির জাতিটা এই ভয়ঙ্কর মহামারির ধাক্কা টা সামলে নিল।

ভ্যাকসিনের জন্য কারুর কাছে হাত পাততে হবে না। ২১৫ কোটি+ ভ্যাকসিন ডোজ বিনামূল্যে দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দিল সাদা দাড়িওয়ালা বুড়োর সরকার। WHO এই পদক্ষেপকে ‘অসম্ভবকে সম্ভব’ করার অ্যাখ্যা দিল।
২৮ মাস ধরে দেশের ৮০ কোটি মানুষকে প্রতিমাসে বিনামূল্যে ৫ কেজি করে খাদ্যশস্য পৌঁছে দিচ্ছে সাদা দাড়িওয়ালা বুড়োর সরকার। IMF বলতে বাধ্য হল, এমন উদ্যোগ নিয়ে ভারত কার্যত পৃথিবীর মধ্যে নজির সৃষ্টি করেছে।
দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে ৩ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ প্রদান। ‘বহু ইউরোপীয় দেশে MSME ধ্বংস হয়ে গেছে অথচ ভারত আশ্চর্যজনকভাবে সবকিছু বাঁচিয়ে নিল’ ~ বলতে বাধ্য হলেন অর্থনীতিবিদ ক্রিশ্চিয়ান কেটেল।
MNREGA প্রকল্পের মজুরি প্রতিদিন ১৮২ টাকা থেকে বেড়ে ২০২ টাকা। এর ফলে উপকৃত হয়েছেন ৫ কোটি শ্রমিক। গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়নে ৪২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
৩ কোটি বিধবা, প্রবীণ নাগরিক ও দিব্যাঙ্গদের বিশেষ আর্থিক সুবিধা প্রদান। ৪১ কোটি জনধন অ্যাকাউন্টে ৫১,৬০৬ কোটি টাকা প্রদান।
২১ কোটি মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে তিন মাস , প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে ভাতা প্রদান।
উজ্জ্বলা যোজনায় ৮ কোটি পরিবারকে বিনা মূল্যে ৩ টি গ্যাস সিলিন্ডার প্রদান।
মুদ্রা শিশু লোনের মাধ্যমে ১৫০০ কোটি টাকার সহায়তা প্রদান।
৩ কোটি কৃষকদের স্বল্প সুদে ৪ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছে।
মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী দের সাথে যুক্ত পরিবার এর জন্যে ২০ লক্ষ টাকা করে লোন কোনো গ্যারান্টি ছাড়া।
নির্মাণ কার্যের সাথে যুক্ত শ্রমিকদের জন্য গঠিত শুল্ক তহবিল থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি পাঠানো হয়েছে।
করোনা মোকাবিলায় প্রতিদিন ২ লক্ষ পিপিই ও N95 বানিয়ে আত্মনির্ভর হয়েছে ভারত।
রাস্তার হকারদের জন্য ৫০০০ কোটি টাকার বিনা গ্যারান্টি ঋণ ব্যবস্থা।
পিএমএওয়াই (শহরাঞ্চল) এর আওতায় মধ্যবিত্তদের জন্য আবাসনের সুবিধে দিতে ঋণের ওপর ভর্তুকি বাবদ ৭০,০০০ কোটি টাকার সংস্থান।
বন্দে ভারত মিশনের মাধ্যমে মহামারির সময়ে বিদেশে আটকে থাকা ভারতীয়দের সরকারি ব্যবস্থাপনায় দেশে ফিরিয়ে আনে কেন্দ্র সরকার।

‘কোভিড কালে গরিবের পাশে দাঁড়ানো এবং সাধারণের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ভারত সরকার যা করেছে, গোটা পৃথিবীর সব দেশ এক জায়গাতে এসেও করতে পারবে না’ – স্বীকার করলেন অস্ট্রেলিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ। দলাই লামা বললেন , ‘মোদির মত কর্মঠ রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন বলেই ভারত আজ করোনা মহামারির বিভীষিকা অতিক্রম করতে পেরেছে, ওঁনাকে অভিনন্দন’। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন স্বীকার করেছেন, করোনা মহামারি মোকাবিলা করতে সবচেয়ে ‘সফল’ নরেন্দ্র মোদি।

হ্যাঁ, তাই আজ ভারতবাসী হিসাবে গোটা পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে চোখে চোখ রেখে সোজাসাপ্টা জবাব দিতে পারি, কোন চিন্তা নেই, আমাদের একটা সাদা দাড়িওয়ালা বুড়ো আছে। সামলে নেবে! ওই যে একটা কথা আছে না, মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়…

লেখক: জয়দেব লাহা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.