ঋতম-বাংলার প্রতিবেদন ; ২২ শে নভেম্বর, নদীয়া। ভারতীয় সংস্কৃতিতে গরু পূজিত হয়ে আসছে প্রাচীন কাল থেকে। মাতৃদুগ্ধের পরেই গরুর দুধের উপকারিতা; সর্বজনমান্য, সার্বিকভাবে গৃহীত এক সুষম আহার, এক অনন্য শিশু খাদ্য। গরুর দুধ থেকে উৎপন্ন মিষ্টান্ন বাঙালির জীবনের অঙ্গ। গরুর উপকারিতা চিন্তা করেই ভারতীয় সংস্কৃতিতে তাকে মায়ের স্থান দেওয়া হয়েছে। এদিন ‘গোপাষ্টমী’ তিথিতে সেই ‘গো-মাতা পূজন’-এর আয়োজন করা হয়েছিল ভারতীয় কিষান সঙ্ঘের নদীয়া জেলার বিভিন্ন বিকাশ ও নগর খন্ডের কার্যকর্তাদের পক্ষ থেকে। এই তিথিতেই শ্রীকৃষ্ণ ও তার দাদা বলরাম প্রথম গো-চারণ করতে গেছিলেন পিতা নন্দরাজের নির্দেশে।
এই পুণ্য তিথিতে নদীয়া জেলার রানাঘাট, হরিণঘাটা, যুগলকিশোর, তেহট্ট ইত্যাদি বিভিন্ন জায়গায় ‘গো-মাতা পূজন’-এর আয়োজন করেন ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘের কার্যকর্তাবৃন্দ। তারা গো-মাতাকে স্নান করিয়ে, শিং ও খুঁড়ে তেল দিয়ে, গলায় মালা পড়িয়ে এবং উপাদেয় খাদ্যের ব্যবস্থা করে পূজনের ব্যবস্থা করে। কিষান সঙ্ঘের কার্যকর্তারা ভারতীয় সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি কৃষকদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠার জন্য সার্বিক চেষ্টা করে চলেছে গো-আধারিত কৃষি বিকাশের মাধ্যমে।
এদিনের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে নদীয়া জেলা সহ-সভাপতি অধ্যাপিকা ড. সুচেতা মুখার্জি জানান যে “গরু আমাদের দুধ দিয়ে পালন করে চলেছে। আবার গরুর গোবর জৈবসার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। রাসায়নিক সারের ব্যবহার বন্ধ করে জৈবসারের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন করলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষেও ভাল। তাই গো-পালনে আমাদের উৎসাহ দিতে হবে।” জেলা সম্পাদক মিলন খামারিয়া জানান, “এ বছরে গো-মাতা পূজনের মাধ্যমে আমরা মানুষকে গো-পালনে আরও উৎসাহিত করেছি। আমার বিশ্বাস আগামী বছর নদীয়া জেলার প্রতিটি গ্রামেই গো-মাতা পূজন করা হবে।” বৈষ্ণব তীর্থ নদীয়ায় এদিন ছিল কৃষ্ণ-বলরাম সম্পর্কে চর্চাও, মানুষের মনে, মন্দিরে-মন্দিরে। মঠ-মাঠ-মন-মন্দির সব একাকার! কৃষি-কৃষ্টির অতি উজ্জ্বল একটি পরবে, গোষ্ঠাষ্টমীতে। সারা বাংলা জুড়েই নানান অঞ্চলে এদিন পালিত হল গো-পূজন, আয়োজক ভারতীয় কিষান সঙ্ঘ।