যুবক কোরোনা রুগির জন্য ছেড়ে দিলেন নিজের বেড। সংস্কার এর কাছে তুচ্ছ করলেন নিজের প্রাণ। সঙ্ঘের স্বয়মসেবকের এক আত্ম বলিদানের কাহিনি।

“I have lived my life, a young patient’s need is greater than that of mine!”

নারায়ণ দাভার্কর এর মুখে এই কথা শুনে চমকে উঠল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওদের চমক ভাঙল দাভার্কর জীর পরিবারের সম্মতিসূচক বাক্যে। কান্না কণ্ঠে কঠিন চোয়ালে পরিবার জানালো, উনি যেমন বলছেন তেমন ই করুন।
মানে, ওনার কিন্তু বাঁচার চান্স আছে। একবার bed ছেড়ে দিলে আর bed পাওযা যাবে না। বোঝানোর চেষ্টা হাসপাতাল staff দের।

ক্ষীণ কণ্ঠে কিন্তু দৃঢ় প্রত্যয়ে নারায়ণ জি শোয়া অবস্থাতেই বললেন, হোক, অনেক দিন তো বাঁচলাম। সমাজ, দেশ কে যা দেবার দিলাম। আর কেনো। বেঁচে ফিরেই বা কতদিন। 5, 10 বছর। তার থেকে যে তরতাজা যুবক এর দেশকে কিছু দেবার আছে তাকেই bed টা দিন। আমার পরিবারের আপত্তি হবে না।

এরপর প্রথাগত সই সাবুদের পর্ব। নারায়ণ জি কে bed থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো । তার জায়গায় এলো ঐ অচেনা যুবক টি । যুবকের পরিবার ও হতবাক। চাইলে bed টা ধরে রাখতেই পারতেন। তার বদলে এক অচেনা যুবকের জন্য এতটা ।

বাঙলার কোনো media এনার খবর করেনি। কারণ এতো দু পয়সার চমকের শ্রমজীবী canteen এর লাল খবর নয়। এ এক চরম আত্ম বলিদান এর সত্য ঘটনা । তাতে আবার গেরুয়া ছোয়া ।

এই 85 বছরের মানুষ টি এলাকায় চকলেট কাকা বলে পরিচিত। নাগপুরের নারায়ণ রাও দাভারকর।

কয়েকদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কোরোনার উপসর্গ নিয়ে। চিকিৎসা চলছিল।

3 দিন আগে হঠাৎই হাসপাতালে এক যুবতী কে দেখলেন কাতর ভাবে ডাক্তার দের হাতে পায়ে ধরছেন। সাথে কচি কচি ছেলে মেয়ে।
জানতে পারলেন, ওনার স্বামী covid আক্রান্ত। চিকিৎসা না পেলে মারা যাবেন। অথচ, হাসপাতালের বেড নেই।

ব্যস। দীর্ঘ দিনের সংস্কার তাকে চুপ থাকতে দিল না। সেই ছোট থেকে ডাক্তার জী গুরুজী র প্রেরনায় নিজেকে উত্সর্গ করেছেন। সারা জীবন কথায় নয় কাজে দেশ সেবার চেষ্টা করেছেন। তবুও কোথাও যেন এক অতৃপ্তি কুরে কুরে খেত । এই সুযোগ ছাড়বেন কেনো?

মেয়ে কে ডেকে পাঠালেন যুবকের প্রাণ বাঁচাতে ছেড়ে দিলেন হাসপাতালের নিজের শয্যা। বাড়ি ফিরে 3 দিন নিজের ঘরে একা একা যুদ্ধ। ডাক্তার জি, গুরুজী র ফটোর সামনে। অবশেষে দেহ রাখলেন। যেন ইচ্ছা মৃত্যুর পরোয়ানা নিজেই লিখলেন নিজের হাতে।
পরিবারএর কথায় এই 3 দিন সারাক্ষণ কখনো পড়েছেন বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থ, স্বামীজি, ডাক্তার জি, গুরুজীর জীবনী। কখনো বা থাকতেন ধ্যান মগ্ন হয়ে।
অবশেষে আজ। করোনা যুদ্ধে প্রাণ হারালেন আরএসএসের এই প্রবীণ স্বয়ংসেবক। মরিয়া প্রমাণ করিয়া গেলেন মনুষ্যত্ব আজ ও মরে নাই।

সেই হাসপাতালে গেলে এখন ইতি উতি এই আত্ম বলিদানের চর্চা। সবার মুখে ঘুরছে প্রচারে না থাকা সংঘের এই স্বয়মসেবক এর সেবা কাজের কথা।

দেবাশিস আইয়ার।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.