কল্যাণ গৌতম
ছোটোবেলায় বালকাশ্রমে একটি গান গাইতাম, “পাখি তুই ঠিক বসে থাক/ঠিক বসে থাক/রামকৃষ্ণ নামের মাস্তুলে।” যিনি তাঁর ঐশ্বর্যের রূপ অন্তরে দেখেছেন, নৈঃশব্দ যাকে জারিত করেছে এক অমর সাহিত্য যাত্রায়, তিনি কী করে নিজেকে মারতে পারেন! কী জানি! কবি জীবনানন্দের ‘আট বছর আগের একদিন’ কবিতার মতো তিনিও কী দেখলেন!
“বধূ শুয়েছিলো পাশে— শিশুটিও ছিলো;
প্রেম ছিলো, আশা ছিলো— জ্যোৎস্নায়– তবু সে দেখিল
কোন্ ভূত? ঘুম কেন ভেঙে গেল তার?
অথবা হয়নি ঘুম বহুকাল— লাসকাটা ঘরে শুয়ে ঘুমায় এবার।”
১৯৩৬ সালের ১৪ ই জুলাই, তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন — আমেরিকায় বসবাসকারী এক বাঙালি বিদ্বজ্জন, লেখক ও শিশু সাহিত্যিক ধনগোপাল মুখোপাধ্যায় (জন্ম ৬ ই জুলাই, ১৮৯০)। তিনি বিবাহ করেছিলেন আমেরিকারই এক প্রখ্যাত শিল্পী ও শিক্ষাবিদ ইথেল রে ডুগান-কে; ১৯১৮ সালের তাদের এক পুত্রসন্তান জন্মায়।
আমেরিকায় প্রথম সফল বাঙালি বুদ্ধিজীবী ধনগোপাল, যিনি সাহিত্য-কৃতিত্বের জন্য ১৯২৮ সালে নিউবেরি পদক লাভ করেছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দ ও অভেদানন্দের পর শ্রীরামকৃষ্ণের মাস্তুল বিদেশের মাটিতে আরও উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরতে ১৯২৮ সালে প্রকাশিত হয় বিখ্যাত গ্রন্থ ‘The Face of Silence’. এই বইয়ের বাংলা ভাষান্তরও তিনি করেছিলেন। ১৯২২ থেকে ১৯৩৬ — এই সময়ের মধ্যে তিনি নাগাড়ে শিশু সাহিত্য রচনা করেছেন৷ তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘Kari the Elephant 1922, ‘Gay Neck, the story of a Pigeon, 1927 ইত্যাদি৷
কলকাতার ডাফ স্কুল (বর্তমানে স্কটিশচার্চ কলেজিয়েট স্কুল) ও কলেজে শিক্ষালাভ; পরে কিছুদিন টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়, এরপর ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলি ও স্ট্যানফোর্ডইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা। বিদেশের মাটিতে ইংরেজিতে তিনিই প্রথম জনপ্রিয় সাহিত্যিক। ‘কাস্ট অ্যান্ড আউটকাস্ট’-ও তাঁর অপর একটি বিখ্যাত গ্রন্থ (১৯২৩)। বিপ্লবী যদুগোপাল মুখোপাধ্যায় তাঁর ভাই। ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মানবেন্দ্র নাথ রায় (M.N.Roy) -এর সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। আমেরিকায় তিনি তাঁকে (নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য) ‘মানবেন্দ্র’ ছদ্মনাম নিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। কমিউনিস্ট ‘কাকাবাবু’-র সঙ্গে কবি কাজী নজরুলের ঘনিষ্ঠতার কারণে কমিউনিস্টদের প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠেন নজরুল। কিন্তু এম. এন. রায়ের ঘনিষ্ঠ ধনগোপালের নাম কতজন কমিউনিস্ট শুনেছেন?
The author of the book ‘The Face of Silence’ can commit suicide, it cannot be accepted.
Kalyan Gautam
As a child, I used to sing a song in the kindergarten, “Birds, you just sit / Sit right /On the mast named Ramakrishna.” He who has seen the form of his splendor in his heart, who has been silenced by silence in an immortal literary journey, how can he kill himself! I know what! What did he see like the poet Jibanananda’s poem ‘One day eight years ago’!
“The bride was lying next to him — the baby was;
There was love, there was hope in the moonlight, yet he saw
Which ghost? Why did he wake up?
Or he hasn’t slept for a long time, now sleeps in the morgue this time. “
On July 14, 1936, he committed suicide – Dhanagopal Mukherjee (born July 7, 1890), a Bengali scholar, writer and children’s writer living in the United States. He married Ethel Ray Dugan, a well-known American artist and educator; In 1918 they had a son.
The first successful Bengali intellectual in America was Dhanagopal, who was awarded the Newberry Medal in 1926 for his literary excellency. After Swami Vivekananda and Abhedananda, the famous book ‘The Face of Silence’ was published in 1926 to highlight the mast of Sri Ramakrishna in foreign lands. He also translated this book into Bengali. 1922 to 1936 – During this period he wrote children’s literature continuously, notable among them are ‘Kari the Elephant 1922’, ‘Gay Neck’, the story of a Pigeon, 1927 etc.
After Duff School (now Scottish Church Collegiate School) and College in Calcutta; Later he studied at the University of Tokyo, then at the University of California, Berkeley and Stanford. He was the first popular writer in English in foreign lands. ‘Cast and Outcast’ is another of his famous books (1923). Revolutionary Jadugopal Mukherjee is his brother. He was also close to Manabendra Nath Roy (M.N. Roy), the founder of the Communist Party of India. In America he advised him (Narendranath Bhattacharya) to take the pseudonym ‘Manabendra’. Nazrul became a favorite of the communists due to his closeness with the communist ‘Kakababu’. But how many communists have heard the name of Dhanagopal, who is close to the verdict?
(ছবি ইন্টারনেট থেকে গৃহীত, কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি)