মদনমোহন তর্কালঙ্কার

তিনি বিদ্যাসাগর মশাইয়ের ক্লাসমেট, বয়সে কিছুটা বড়। ছিলেন ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের অধ্যাপক। পরে মুর্শিদাবাদ জেলায় বিচারক ও ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত হন। স্ত্রীশিক্ষা ও শিশুশিক্ষায় তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। বিদ্যাসাগরের ‘বর্ণপরিচয়’ বইটির আগেই তিনি প্রকাশ করেছিলেন তিন খণ্ডে রচিত শিশুপাঠ্য বই ‘শিশুশিক্ষা’। বিদ্যাসাগর মশাইয়ের সমাজ সংস্কারের কাজে তিনি একজন সক্রিয় সহযোগী ছিলেন। ১৮৫৮ সালে কলেরা রোগে তাঁর অকালপ্রয়াণ যদি না ঘটতো তবে তাঁকে নবজাগরণের আরও উল্লেখযোগ্য কাজে অংশ নিতে দেখতে পেতাম। তাঁর লেখার হাত কতটা যে মিষ্ট ছিল, তাঁর লেখা একটি কবিতার উদাহরণই বোধহয় যথেষ্ট হবে। বাংলা ভাষার বিকাশ সাধনে তাঁর অবদান অমোচ্য থাকবে।

“পাখী-সব করে রব, রাতি পোহাইল।
কাননে কুসুমকলি, সকলি ফুটিল।।
রাখাল গরুর পাল, ল’য়ে যায় মাঠে।
শিশুগণ দেয় মন নিজ নিজ পাঠে।।
ফুটিল মালতী ফুল, সৌরভ ছুটিল।
পরিমল লোভে অলি, আসিয়া জুটিল।।
গগনে উঠিল রবি, লোহিত বরণ।
আলোক পাইয়া লোক, পুলকিত মন।।
শীতল বাতাস বয়, জুড়ায় শরীর।
পাতায় পাতায় পড়ে, নিশির শিশির।।
উঠ শিশু মুখ ধোও, পর নিজ বেশ।
আপন পাঠেতে মন, করহ নিবেশ।।”

তাঁর আজ জন্মবার্ষিকী (৩ রা জানুয়ারি, ১৮১৭)। অন্তরের শ্রদ্ধা জানাই।

@কচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.