বাম-সেকুলার-অহিন্দু বাঙালি বর্ষ প্রতিপদ নয়, চায় পয়লা বৈশাখের মোঘলাই নববর্ষ – Left-secular-non-Hindu Bengali does not want ‘Varsha Pratipad’, wants Mughali New Year of ‘Poila Boishakh’

চৈত্র শুক্ল প্রতিপদ তিথিতে ভারতীয় নববর্ষ পালনের মধ্যে দীর্ঘ পারম্পর্য এবং সনাতনী-ঐতিহ্যের প্রেক্ষাপট রয়েছে। পক্ষান্তরে বঙ্গাব্দে বছর শুরুর দিনটা কেবলই আর্থিক এবং ব্যবসা ভিত্তিক; তাকে আর যাইহোক, জাতীয় উৎসব বলা চলে না, তাতে আমজনতার স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ নেই। জাতীয় উৎসবে দীর্ঘ ঐতিহ্য ও আবেগ যুক্ত থাকে, তা ধর্ম আধারিত হয়। পয়লা বৈশাখ পালিত হচ্ছে, হবেও — একদম ঠিক কথা; কিন্তু কোথাও মনেহয়, দিনটি দখল করে ভারতীয় ঐতিহ্য ও পরাম্পরার প্রতি সমানে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে গেছে রাজ্যের সেকুলার বুদ্ধিজীবীর দল, সঙ্গে হাওয়া দিয়েছে বাংলাদেশের মুসলমান-সমাজ। তারা বহু বছর ধরেই দিনটিকে মোঘল-আকবরী ইতিহাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রমাণ করে কার্যসিদ্ধি করে চলেছে। তাদের মতে, বাংলা ক্যালেণ্ডার বা বঙ্গাব্দের সূত্রপাত আকবর প্রবর্তিত ইলাহী সৌর ক্যালেণ্ডার থেকেই। বঙ্গাব্দের প্রথমদিনের সঙ্গে কোনো বিশিষ্ট ধর্মীয় যোগাযোগ না থাকায় তাদের কাজ করতেও সুবিধা হয়েছে। আদতে দিনটি দখল নিয়ে হিন্দু নববর্ষের প্রতিস্পর্ধী হতে চায় সেকুলার বাঙালি। তাই ভারতীয় সংস্কৃতির সাহচর্যে থেকে বাঙালিও নববর্ষ পালন করুক চৈত্র শুক্ল প্রতিপদ তিথিতেই। ভারতবোধ-সঞ্জাত এই দিনেই যাবতীয় ধর্মীয় আচার পালিত হোক বাঙালির ঘরে ঘরে; পূজার্চনা, যাগযজ্ঞ সব কিছুই, হোক আলপনা, ধূপদীপ প্রদান। হিন্দু ব্যবসায়ীরা চাইলেও এই দিনটি বিশেষ মর্যাদায় পালন করতে পারেন, শুরু করতে পারেন খেরোখাতা। আজ ১৩ই এপ্রিল, মঙ্গলবার ২০২১ খ্রীস্টাব্দ; ৫১২৩ যুগাব্দ এবং ২০৭৮ বিক্রম সংবৎ। আজ হিন্দু সম্বৎসরের প্রথম দিন। এই দিন আপামর ভারতবাসীর সঙ্গে বাঙালি হিন্দুদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।

বিশিষ্ট বাঙালি সাহিত্যিক অন্নদাশঙ্কর রায়ের মতে, “বছর শুরুর এই দিনটা আমার মনে হয় শুধু আর্থিক। যেন ব্যবসা সম্পর্কিত মানুষজনের দিনই হল ১ বৈশাখ। তাই এই দিনটিতে উৎসব বলতে আমার আপত্তি আছে। ১ বৈশাখ উৎসব হবে কী করে৷ কতজন মানুষ এই দিনটির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত? শুধু ব্যবসায়ী আর বুদ্ধিজীবীরা তো আর সমগ্র জাতি নয়। একটা জাতির কত ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ তারা। এখনও পর্যন্ত তাই ১ বৈশাখ দিনটি সমগ্র জাতির উৎসব বলে চিহ্নিত হয়নি। বোধহয় হবেও না। যেমন দোল, দুর্গোৎসব দেওয়ালি সমগ্র জাতির কাছে বর্ণ শ্রেণী নির্বিশেষে উৎসব। জাতীয় উৎসব। কোন না কোনভাবে সমগ্র জাতির প্রতিটি ব্যক্তিজীবনের সঙ্গে উৎসবগুলো জড়িয়ে আছে। দোল, দুর্গোৎসব দেওয়ালির মত ১ বৈশাখ তো আর সবার মুখে হাসি ফোটায় না। রঙও ধরায় না। লোকে যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে নববর্ষের উৎসবে যোগদান করতে নাই পারে তা হলে শুধুমাত্র অফিস-আদালত বন্ধ করে সে উৎসবের আমেজ আনা যাবে না। সাধারণত এদিনটায় যেহেতু ছুটি থাকে তাই দেখি বাবুরা সব দল বেঁধে বন্ধুবান্ধব-স্ত্রীপুত্র নিয়ে মোটর হাঁকিয়ে চললেন দীঘা নয়তো ডায়মন্ডহারবার।”

ঠিকই বলেছেন অন্নদাশঙ্কর বাবু। ‘বাঙালি’ ‘বাঙালি’ করে চেঁচিয়ে ভারতবর্ষীয় মূলস্রোত থেকে বাঙালিকে বিছিন্ন করার মানসেই পয়লা বৈশাখের বিশেষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রমরমা। আপনিই বলুন, পয়লা বৈশাখের কী প্রাচীন ঐতিহ্য আছে, যা চৈত্র শুক্ল প্রতিপদ তিথিতে পাওয়া যায়? হিন্দু বিশ্বাস, চৈত্র শুক্ল প্রতিপদ তিথি হচ্ছে জগৎ সংসার সৃষ্টির প্রারম্ভ-দিবস। এদিন মহর্ষি গৌতমের জন্মতিথি। এদিন বিক্রম সংবৎসহ অন্যান্য বহু সংবৎ-এর শুভারম্ভ দিবস। এদিনেই সূচনা নবরাত্রি উৎসবের। এদিনেই মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরামচন্দ্রের রাজ্যাভিষেক তিথি। আবার এদিনেই আর্যসমাজের প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা ড. হেডগেওয়ারের জন্মতিথি। কিন্তু সেকুলার বাঙালির মাথায় একটিই মূলসূত্র ঘুরপাক খাচ্ছে, তা হল বঙ্গাব্দের সঙ্গে হিজরির হিসেবনিকেশ। আকবরের ইলাহি ক্যালেণ্ডারের শুরু হিজরি ৯৬৩ সালে, অর্থাৎ ১৫৫৬ খ্রীস্টাব্দে। বর্তমানে ২০২১ খ্রীস্টাব্দ, অর্থাৎ ইলাহি শুরুর পর ২০২১-১৫৫৬=৪৬৫ বছর এগিয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই ৪৬৫-র সঙ্গে হিজরি ৯৬৩ যোগ করলে দাঁড়ায় (৯৬৩+৪৬৫=১৪২৮) বঙ্গাব্দের হিসাব। এবার ১৪২৮ বঙ্গাব্দ। যেহেতু মোগল উত্তরাধিকার নিয়ে চলতেই বেশি পছন্দ সেকুলার বাঙালির, সেজন্যই হিন্দু বর্ষ প্রতিপদ পালনে তাদের প্রবল অনীহা। বাঙালি হিন্দু তা বুঝবে কবে?

কল্যাণ গৌতম

Left-secular-non-Hindu Bengali does not want ‘Varsha Pratipad’, wants Mughali New Year of ‘Poila Boishakh’

The celebration of Indian New Year on the date of Chaitra Shukla Pratipada has a long tradition and Hindu context. On the other hand, the beginning of the year in Bangabda is only financial and business based; It can no longer be called a national festival, however, without the spontaneous participation of the general public. National festivals have a long tradition and passion, they are based on religion. Poila Boishakh is being celebrated, it will be – that’s right; But somewhere, it seems, by seizing the day, the secular intellectuals of the state have thrown an equal challenge to the Indian tradition and religion, along with the Muslim-society of Bangladesh. They have been working for many years to prove that the day is associated with Mughal-Akbari history. According to them, the beginning of the Bengali calendar or Bangabda is from the solar calendar introduced by Akbar. Since there was no prominent religious connection with the first day of Bangab, they had the advantage of working. Secular Bengalis want to compete with the Hindu New Year by occupying the day. Therefore, let the Bengalis also celebrate the New Year in association with Indian culture on the date of Chaitra Shukla Pratipada. On this day, all religious rituals should be celebrated in the homes of Bengalis; Worship, Yajna, everything, be it Alpana, offering incense. Hindu traders can celebrate this day with special dignity even if they want, they can start Kherokhata. Today is April 13th, Tuesday 2021 AD; 5123 Yugabda and 206 Vikram Sambat. Today is the first day of the Hindu year. My Greetings and congratulations to the Bengali Hindus on this day with all our Indians.

According to eminent Bengali writer Annadashankar Roy, “I think this day of the beginning of the year is just financial. As if the day of business people is 1 Baishakh. So I have an objection to call this day a festival. How can 1 Baishakh be a festival? Only businessmen and intellectuals are no longer the whole nation. What a small fraction of a nation they are. So far, 1 Baishakh has not been marked as a festival of the whole nation. Probably not. In one way or another, festivals are associated with every individual life of the entire nation. Like Dol, Durgotsab Dewali, 1 Baishakh no longer brings smiles to everyone’s face, nor does it change color. You can’t bring amazement. Usually, since there is a holiday on this day, I see that the parents are driving a motorbike with their friends and wives to Digha or Diamond Harbor. “

Annadashankar Babu is right. The special purposeful rumor of the holy Boishakh is to isolate the Bengalis from the Indian mainstream by shouting ‘Bengali’. Tell me, what is the ancient tradition of Poila Boishakh, which is found on the date of Chaitra Shukla Pratipada? Hindu belief, Chaitra Shukla Pratipada Tithi is the beginning day of the creation of the world. This day is the birthday of Maharshi Gautam. This day is the beginning day of Vikram Samvat and many other Sambats. This is the beginning of Navratri festival. This day is the coronation date of Sri Ramachandra. On the same day, the establishment of the Arya Samaj, the founder of the Rashtriya Swayamsevak Sangh. Dr. Hedgewar’s date of birth. But the only principle revolving in the minds of secular Bengalis is the reckoning of Hijri with Bangabda. Akbar’s Divine Calendar started in 963 AH, i.e. 1556 AD. At present 2021 AD, i.e. 2021-1558 = 475 years has passed since the beginning of Elahi. Significantly, adding 963 Hijri to this 465 gives (963 + 475 = 1428) the calculation of Bangabda. This time it is 1428. Since secular Bengalis prefer to carry on the Mughal legacy, that is why they have a strong reluctance to celebrate the Hindu year. When will Bengali Hindus understand that?

Kalyan Gautam.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.