ছাত্রাবস্থায় চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার দখলের কার্যক্রমে তিনি অংশগ্রহণ করেন। সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক সূর্যসেনের নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী আইরিশ বিপ্লবীদের ‘ইস্টার বিদ্রোহের’ স্মৃতি বিজড়িত ‘গুডফ্রাইডের’ দিনে, ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল রাত দশটায়, চট্টগ্রামে বিপ্লবীদের অত্যন্ত সুপরিকল্পিত অভিযান শুরু করার বিষয়ে বিপ্লবীদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পূর্ব-পরিকল্পনা অনুসারে প্রয়োজনীয় অস্ত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রামের বিভিন্ন অস্ত্রাগার দখলের কর্মসূচি গ্রহণ করেন বিপ্লবীরা। রাতে বিপ্লবীরা সশস্ত্র অভ্যুত্থানের মাধ্যমে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার দখল করেন। বিপ্লবীরা একের পর এক অতর্কিত আক্রমণ করে সরকারি অস্ত্রাগার, টেলিফোন কেন্দ্র, টেলিগ্রাফ ভবনসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে নেন, যা ছিল দেড়শত বছরের ইতিহাসে ইংরেজদের জন্য খুবই অপমানজনক ঘটনা। এটি ছিল সরাসরি ইংরেজ বাহিনীর প্রথম পরাজয়।
চারদিন পরে ২২ এপ্রিল বিকেল বেলা বিপ্লবীদের সাথে জালালাবাদের যুদ্ধে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ৮০ জন সেনা মারা যান। এদিকে বিপ্লবীরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন, কিন্তু জীবন ঘোষাল আর বিপ্লবীদের সাথে সাক্ষাতের সময় পাননি। পরে তৎকালীন নোয়াখালী জেলার ফেনী রেল স্টেশনে জীবন ঘোষাল ধরা পড়েন কিন্তু পুলিস হাজত থেকে পালিয়ে গিয়ে আত্মগোপন করেন। কলকাতার পুলিস কমিশনার চার্লস টেগার্ট সাহেব পরিচালিত পুলিশবাহিনীর সংগে চন্দননগরে এক সশস্ত্র সংঘর্ষে আহত হয়ে মারা যান।
জীবন ঘোষালের জন্ম চট্টগ্রামের সদরঘাটে। তাঁর পিতার নাম যশোদা ঘোষাল। তাঁর প্রকৃত নাম মাখনলাল। পড়াশোনায় ছিলেন জীবন ঘোষাল প্রথম শ্রেণীর ছাত্র। ইন্টারমিডিয়েটের প্রথম বার্ষিক শ্রেণীতে পড়তেন, তখন তিনি বিপ্লবী দলে যোগদান করেছিলেন।
…………………
তথ্য সংগ্রাহক – প্রতাপ সাহা (https://www.facebook.com/pratapcsaha)। ধন্যবাদ।