সুপ্রিম কোর্টে খারিজ লোন মোরাটোরিয়ামের মেয়াদ বৃদ্ধি আবেদন

ঋণের ক্ষেত্রে আর মোরেটোরিয়াম পর্বের মেয়াদ বৃদ্ধি সম্ভব নয়, ঋণের সুদও পুরোপুরি মকুব অসম্ভব । মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত এক মামলার রায়ে এ কথা জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট । স্বাভাবিকভাবেই দেশের শীর্ষ আদালতে এই রায়ে স্বস্তি পেল ব্যাঙ্কিং সেক্টর, তবে সঙ্কটে পড়ল কর্পোরেট সংস্থাগুলি।

সুপ্রিম কোর্ট গত বছরের এক রায়ে ঋণের সুদের উপর সুদ না নেওয়ার বিধান দিয়েছিল। সেই সময়ে এই নির্দেশ দেশের অসংখ্য মানুষকে স্বস্তি দিয়েছিল। মুলত করোনা কালে দেশের আর্থিক পরিস্থিতি এবং রোজগার স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে লোন মোরাটোরিয়ামে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। লকডাউন পর্বে আগস্ট ২০২০ পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল ছিল। কিন্তু, সেই সময়কাল আরও বাড়ানোর আর্জি জানানো হয় আদালতে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও বণিক সংগঠনের তরফে এমনই আর্জি জানানো হয় শীর্ষ আদালতে। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, এম আর শাহ ও সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ এদিন সেই আর্জির খারিজ করে দেয়। সুপ্রিম কোর্ট এদিন জানায়, সম্পূর্ণ সুদ মুকুব অসম্ভব। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারও কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। তা সত্ত্বেও জনতার সুবিধার্থে কেন্দ্র ও আরবিআই যথাসম্ভব ঋণে ছাড় দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তবে, এর চেয়ে বেশি সময়কাল বাড়ানো হলে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

এর আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের একটি হলফনামায় বলা হয়েছিল, ৬ মাসের মেয়াদ শেষের পরও এই স্থিতাবস্থা চললে নগদের জোগানের ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হবে, ঋণদাতাদের উপরও চাপ বাড়বে। আবেদন মেনে সুদ মকুব ও ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বৃদ্ধি— কোনওটাই আর সম্ভব নয়, গত অক্টোবরেই সুপ্রিম কোর্টে একটি হলফনামা পেশ করে জানিয়ে দিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া।

একইসঙ্গে আদালত জানিয়েছে, সরকার বা রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে কোনও অর্থনৈতিক প্যাকেজ বা ছাড় ঘোষণার নির্দেশ দেওয়াও সম্ভব নয়। ডিভিশন বেঞ্চের কথায়, ‘অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে আদালতের কোনও অধিকার নেই। কী কী আর্থিক সুবিধা দেওয়া হবে, তা ঠিক করে দেওয়া আদালতের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে না।’ মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতের এই রায়ে এ বার কেন্দ্র আর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ওই সিদ্ধান্তেই সিলমোহর পড়ল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.