সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ-র বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে যে বিক্ষোভ হয়েছে তার পেছনে রয়েছে পিএফআই নামে উগ্র মৌলবাদী সংগঠন। তারা এই বিক্ষোভ সংগঠিত করতে ১২০ কোটির বেশি টাকা খরচ করছে। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল তদন্তে।
বিক্ষোভ চলাকালীনই উত্তর প্রদেশে যোগী সরকার অভিযোগ করে এই পুরো আন্দোলন সংগঠিত করতে পিএফআই বিদেশি মদত পেয়েছে। তদন্তের পরেও এই একই তথ্যই উঠে এসেছে বলে একটি ইংরেজি পোর্টালে প্রতিবেদনে প্রকাশ হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী,
উত্তরপ্রদেশের সিএএ বিরোধী বিক্ষোভের পেছনে উগ্র মৌলবাদী সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার হাত রয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে আগেই অভিযোগ জানিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। পিএফআইকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়েছিল রাজ্য সরকারের তরফে। সেই চিঠি পাওয়ার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তদন্ত শুরু হয়।
সংগঠনটির বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ-খবর শুরু করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। কোনও বিদেশী সংস্থা ওই মৌলবাদী সংস্থাকে আর্থিক সাহায্য করছে কিনা তা খতিয়ে দেখে তদন্তকারীরা। দেখা যায় সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই পিএফ আই এর অন্তত ৭৩ টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তাতে ১২০ কোটি টাকারও বেশি অর্থের লেনদেন হয়েছে। আর ওই সব অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেন হয়েছে সিএএ বিরোধী হিংসাত্মক আন্দোলন চলাকালীন। আর এর থেকেই অনুমান করা হচ্ছে এই বিক্ষোভ আন্দোলন পরিচালনা করতেই এই বিপুল টাকা খরচ হয়েছে। তবে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথা থেকে ওই অ্যাকাউন্টগুলিতে এল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তদন্তে নেমে দিল্লি উত্তরপ্রদেশ মনিপুর কেরালা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও বেসরকারি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন গোয়েন্দারা। পিএফআই এর সঙ্গে জড়িত ২৫ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে টাকা নয়ছয়ের মামলাও দায়ের করা হয়। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ পিএফআই বিস্তারের পেছনে বিদেশি শক্তির হাত রয়েছে বলে আগেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। ২৮টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে রাজ্যে বিভিন্ন প্রান্তে হিংসা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল যোগী রাজ্যের পুলিশ। উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য অভিযোগ করেছিলেন এই সংগঠনটি মৌলবাদী সংস্থা শাখা এরা দেশবিরোধী কাজেলিপ্ত। পিএফ আই এর সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির সম্পর্কে তদন্ত করে সেই তথ্য প্রমাণ জোগাড় করছে তদন্তকারীরা বলে খবর।
এব্যাপারে সিংহবাহিনীর সভাপতি দেবদত্ত মাজি বলেন, পিএফআই এবং বেশ কিছু মুসলিম সংগঠন টাকা দিয়ে শুধু টাকা দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপই নয়, তারা মাইক্রো এবং ম্যাক্রো লেভেলে দাওয়াতেরও কাজ করছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে মুসলিম যুবক-যুবতীদের দাওয়াতের ট্রেনিং দিচ্ছে। হিন্দুদের ধর্মান্তকরণের কাজ চলছে সারাদেশে। তাদের লক্ষ্য ভারতকে দ্রুত দারউল ইসলামে পরিণত করা। দেবদত্তবাবু বলেন, এই ধর্মান্তরকরণের কাজ কোনও সন্ত্রাসবাদি কাজের থেকে কম নয়, কিন্তু এগুলো সরকার এবং সাধারণ মানুষের লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে যাচ্ছে। এই বিষয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলি যাতে নজর দেয় এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় তার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।