শুধু ওয়ারড্রোব থেকে নয়, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সূত্রে জানা গিয়েছে, টাকা উদ্ধার হয়েছে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটের শৌচাগার থেকেও। সেখানে ব্যাগে, প্লাস্টিকের প্যাকেটে ভরে রাখা ছিল ওই টাকা। একই সঙ্গে জানা গিয়েছে, ওই ফ্ল্যাট থেকে ৪.৩১ কোটি টাকার সোনা উদ্ধার হয়েছে, তাতে গয়নার থেকে বাট বেশি।
উদ্ধার হওয়া টাকার পরিমাণ অর্পিতার টালিগঞ্জের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া ২২ কোটিকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। সাক্ষী হিসাবে উপস্থিত থাকা আবাসন কমিটির সম্পাদক অঙ্কিত চুরারিয়া জানিয়েছেন, বেলঘরিয়ায় উদ্ধার হওয়া টাকার পরিমাণ ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ। এ ছাড়া উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু সম্পত্তির দলিল, সম্পত্তি সংক্রান্ত নথিপত্র এবং কয়েক হাজার টাকার বাতিল নোট। যদিও ইডির তরফে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না দেওয়া পর্যন্ত কোনও তথ্যই সমর্থনযোগ্য নয়।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার টালিগঞ্জের একটি আবাসনে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ প্রায় ২২ কোটি টাকা, সোনার গয়না এবং বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করে ইডি। তার পর জানা যায়, বেলঘরিয়াতেও ফ্ল্যাট রয়েছে অর্পিতার। বুধবার সেখানেই অভিযান চালায় ইডি। বৃহস্পতিবার ভোর ৪টে নাগাদ টাকা গণনা শেষ হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মীদের ডেকে এনে মোট চারটি বৃহদাকার যন্ত্রে চলছিল টাকা গোনা। কলকাতার এসবিআইয়ের একটি শাখা থেকে যন্ত্রগুলি বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে ইডি সূত্রে খবর। সাধারণত ওই যন্ত্র ব্যবহার হয় ‘কারেন্সি চেস্ট’-এ। ইডির একটি সূত্রের দাবি, প্রথমে পাঁচটি সাধারণ যন্ত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু টাকার পরিমাণ দেখে বড় মাপের যন্ত্র আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
নোটগণনার সাক্ষী হিসেবে এক ব্যক্তিকে ফ্ল্যাটের উপরে নিয়ে গিয়েছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। তার আগে যদিও ২০টি ট্রাঙ্ক-সহ একটি বড় ট্রাক নিয়ে আসা হয়েছিল ওই আবাসনে। ওই ট্রাঙ্কে ভরেই উদ্ধার করা টাকা নিয়ে যাওয়া হয় সকালে। তার আগে টাকা ও অন্যান্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া চলে। মোট আটটি ট্রাঙ্কে টাকা ভরা হয় এবং একটিতে সোনার বাট ও গয়না রাখা হয়।
বেলঘরিয়ার ‘ক্লাব টাউন’ আবাসনে বুধবার বেলা ১২টা নাগাদ পৌঁছয় ইডি। ওই আবাসনে দু’টি ফ্ল্যাট রয়েছে মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতার। দু’টি ফ্ল্যাটের একটিতে টাকার সন্ধান পান তদন্তকারীরা। তল্লাশির পর অন্য ফ্ল্যাটটি ‘সিল’ করে দেওয়া হয়। তার পর শুরু হয় অন্য ফ্ল্যাটে টাকা গোনা।