মুকেশ আম্বানি এবং গৌতম আদানি। এশিয়ার সম্পদের পর্বতের শীর্ষ দুই আরোহী। বছরের পর বছর একে অপরের কাছাকাছিই ছিলেন। একজন টেলিকম এবং খুচরো ব্যবসায় সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। অপরজন পরিবহন এবং শক্তি ক্ষেত্রে জোয়ার এনেছেন। সম্পূর্ণ আলাদা আলাদা ব্যবসায় চূড়ান্ত সফল। তবে সেটা পাল্টাচ্ছে।
ইদানিং ভারতের গুজরাটের দুই বিলিয়নেয়ারের কাজ ‘ওভারল্যাপ’ করতে শুরু করেছে। এর ফলে একটি ‘সংঘর্ষের’ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আর এত বড় লড়াইয়ে দেশের ব্যবসায়িক ল্যান্ডস্কেপে বড়সড় পরিবর্তনের আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
একই কক্ষপথে দুই গ্রহ। তার সর্বশেষ উদাহরণ হল, আদানি গ্রুপের সৌদি আরামকোর অংশীদারিত্ব কেনার আলোচনা।
অন্যদিকে এর কয়েক মাস আগেই আম্বানির রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং আরামকোর দুই বছর ব্যাপী আলোচনা স্থগিত হয়েছে। তেল থেকে কেমিক্যাল উত্পাদনের ইউনিটের ২০% সৌদি আরামকোর কাছে দিতে চেয়েছিল রিলায়েন্স। তার বদলে ২০-২৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের আরামকো শেয়ার নিত সংস্থা।
অংশীদারিত্ব দৃঢ় করার প্রয়াসে রিলায়েন্স আরামকোর চেয়ারম্যান ইয়াসির আল-রুমাইয়ানকে গত বছর এক স্বাধীন পরিচালক হিসাবে তাদের বোর্ডে যোগদান করায়। কিন্তু দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে আলোচনার পর এই পরিকল্পনা স্থগিত হয়।
এদিকে তার কয়েক মাস পরেই আদানির সঙ্গে এক টেবিলে আরামকো।
Aramco, বিশ্বের ১ নম্বর অপরিশোধিত তেল উৎপাদনকারী। তার সঙ্গে আম্বানির রিলায়েন্সই যে সবচেয়ে খাপ খায়, তাই নিয়ে অবশ্য কোনও সন্দেহ নেই। রিলায়েন্সের কাছেই গুজরাটের জামনগরে বিশ্বের বৃহত্তম পরিশোধন কমপ্লেক্স রয়েছে৷ তাছাড়া রিলায়েন্স বিশ্বের অন্যতম বড় পলিমার, পলিয়েস্টার এবং ফাইবার-ইন্টারমিডিয়েট নির্মাতা।
কিন্তু, আদানিও, BASF SE, Borealis AG, এবং Abu Dhabi National Oil Co., or Adnoc-এর সহযোগিতায় গুজরাটের মুন্দ্রা বন্দরের কাছে $৪ বিলিয়ন মূল্যের অ্যাক্রিলিক্স কমপ্লেক্স স্থাপন করে পেট্রোকেমিক্যালের ব্যবসায় প্রবেশ করতে চাইছে। কোভিডে সেই পরিকল্পনা কিছুটা পিছিয়ে যায়।
ব্লুমবার্গ নিউজ অনুসারে, আরামকোর সঙ্গে আদানির প্রাথমিক আলোচনায় একটিই মূল ফোকাস ছিল -পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, কৃষির সার বা রাসায়নিক উত্পাদনে সহযোগিতা। আরামকো যদি এখনও ভারতে একটি ক্যাপটিভ রিফাইনারির মালিকানার জন্য আগ্রহী থাকে, সেক্ষেত্রে আদানির সঙ্গে তাদের অংশীদারিত্ব কাজে আসতে পারে।
এটা হলে দুই বিলিয়নেয়ারই সরাসরি প্রতিযোগিতায় মুখোমুখি হবেন। যদিও সেটা এই প্রথমবার নয়। গত বছরের জুন মাসে, আম্বানি তাঁর শেয়ারহোল্ডারদের বলেন, ‘তিনি সবুজ শক্তি এবং জ্বালানির জন্য একটি পিভট তৈরি করে তার জীবনের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং উদ্যোগ শুরু করছেন।’ অন্যদিকে এর আগেই, আদানি ঘোষণা করেছিলেন যে তাঁরা ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনকারী হতে চান। জামনগরে চারটি গিগাফ্যাক্টরির জন্য তাঁর পরিকল্পনা প্রকাশ করেন তিনি। চারটি গিগা ফ্যাক্টরি -সৌর প্যানেল, ব্যাটারি, সবুজ হাইড্রোজেন এবং ফুয়েল সেল, প্রতিটির জন্য একটি করে।